এমবিবিএস বা বিডিএস কোনো ডিগ্রি না থাকলেও নিজেকে ‘ডাক্তার’ পরিচয়ে পরিচিত করে দীর্ঘদিন ধরে রোগী দেখে আসছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা প্রজন্ম লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা প্রদীপ বসু।
জেলা সদর হাসপাতালের পাশেই ‘গ্রীন লাইফ হাসপাতাল’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন তিনি। রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া সবই করতেন নিয়মিত। এতে বিভ্রান্ত ও প্রতারিত হচ্ছিলেন অনেক রোগী।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে সেখানে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহসানুল হক।
অভিযানকালে দেখা যায়, প্রদীপ বসু নিজেকে বিদেশি নানা চটকদার ডিগ্রিধারী চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন, যদিও সেগুলোর বাস্তব কোনো ভিত্তি নেই। ম্যাজিস্ট্রেটের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, তার নেই এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রি।
তিনি জানান, তার একটি ডিএমএফ ডিগ্রি রয়েছে এবং বিএমডিসির ‘ডি ক্যাটাগরি’ রেজিস্ট্রেশন নিয়েই তিনি রোগী দেখছেন।
তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহসানুল হক বলেন, স্বীকৃত ডিগ্র্রি ছাড়াই নিজেকে ডাক্তার দাবি করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া এবং রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এ অপরাধে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়।
অভিযানের সময় প্রদীপ বসু ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং তার বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থাকে ‘হেনস্থা’ বলেও দাবি করেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে অতীতেও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছিল, তবে রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তিনি বারবার রক্ষা পেয়ে যান। এবার ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যবস্থা নিলেও তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, সেই প্রশ্ন এখন স্থানীয়দের মুখে মুখে।
এই ঘটনার পর চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনিয়ম ও ভুয়া পরিচয়ের বিরুদ্ধে প্রশাসনের আরো তৎপরতা আশা করছেন সাধারণ মানুষ।
কেকে/এএম