ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ের খোঁজে বন্যার্তরা

শহীদনূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ
🕐 ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২২

ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ের খোঁজে বন্যার্তরা

সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। টানা সময় ধরে পানিবন্দি অবস্থায় নিরুপায় হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ের খোঁজে অন্যত্র যাচ্ছেন বন্যাকবলিত মানুষ।

আসবাবপত্র, হাঁস-মুরগি, গৃহপালিত পশু সরিয়ে নিচ্ছেন উঁচু স্থানে। কেউ কেউ এসব ফেলেই পরিবার নিয়েই আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় স্কুল কিংবা ফ্লাড সেন্টারে। আবার কেউ সুযোগ-সুবিধা না থাকায় ঘরের উপরেই মাছা তৈরি করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও স্যানিটেশন সুবিধা না থাকায় বন্যাকবলিত এলাকা ও আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষগুলো চরম কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। পরিবারের শিশু ও বয়স্ক সদস্যরা পড়েছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। এসব এলাকায় ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে।

শহরের পূর্ব সুলতানপুর এলাকা থেকে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে আশ্রয় নিয়েছে অর্ধশতাধিক পরিবার। বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় বন্যার পরে পুনর্বাসন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এসব পরিবারের সদস্যরা।

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে ৬ দিন ধরে কলেজে উঠেছি। ঘরবাড়িতে কোমর পানি। পানি আমার সব শেষ করে দিছে।

আবুল কালাম নামের আরেকজন বলেন, তিনদিন ধরে আছি, কাজকাম নেই। চালপাত বা হাতে টাকাও নেই। ৫ সন্তান নিয়ে না খেয়ে সময় পার করছি।

নাছিমা আক্তার বলেন, চারদিন পর আজ ডিসি আর মেয়র সাহেব কিছু চাল দিয়ে গেছেন। অস্থায়ী চুলায় খিচুড়ি করে ছেলেসন্তানদের দিচ্ছি। আমার শাশুড়ি আর এক বাচ্চা ডায়রিয়ায় ভুগতেছে।

এদিকে উজানের পানি ধীরে ধীরে ভাটি এলাকা থেকে চাপ সৃষ্টি করায় নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে জেলার জগন্নাথপুর, শান্তিগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা উপজেলার নতুন নতুন এলাকায়। রাস্তা-ঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থানসহ বিভিন্ন স্থাপনা ডুবে যাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলের হাজারো মানুষ।

ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক উন্নতি হচ্ছে বলে দাবি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলামের।

জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন্যার্ত এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জিআর চাল, নগদ টাকা ও শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আমরা সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছি।

 
Electronic Paper