ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পশুপাখির হক আদায়ে ইসলামে গুরুত্বারোপ

অনলাইন ডেস্ক
🕐 ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২৩

পশুপাখির হক আদায়ে ইসলামে গুরুত্বারোপ

আল্লাহ পৃথিবীতে বহু প্রজাতির প্রাণী সৃষ্টি করেছেন। এসব প্রাণী ও পশুপাখির হক আদায়ের প্রতিও বেশ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে ইসলামে। পশু-পাখির যত্ন নেওয়া, আহার যোগানো, খোঁজখবর রাখা ইবাদত বলে গণ্য হয়। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘পৃথিবীতে বিচরণশীল যত প্রাণী আছে, আর যত পাখি দুই ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়, তারা সবাই তোমাদের মতো স্বতন্ত্র জাতি।’ (সুরা আনআম, আয়াত, ৩৮)

পশু-পাখি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে প্রায় দুই শতাধিক আয়াত বর্ণিত হয়েছে। বিভিন্ন পশু-পাখির নামে সুরাও অবতীর্ণ হয়েছে। যেমন, সুরা বাকারা (গাভি), সুরা আনআম (উট, গরু, বকরি প্রভৃতি গবাদি পশু), সুরা নাহল (মৌমাছি), সুরা নামল (পিপীলিকা), সুরা আনকাবুত (মাকড়সা), সুরা ফিল (হাতি) ইত্যাদি। মানবজাতির জন্য হেদায়াতের দিশারি পবিত্র কোরআনে এমন নামকরণ থেকেও পশু-পাখি প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি অনুমিত হয়।

পশু-পাখির প্রতি দয়া প্রদর্শনও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যেকোনো প্রাণীর ওপর দয়া করার মধ্যেও রয়েছে প্রভুত সওয়াব।’ (বুখারি, আয়াত, ৬০০৯)

পালিত পশু-পাখিকে যথাযথ আহার দান, সঠিক যত্ন নেওয়া এবং তার যেন কোনো প্রকার কষ্ট না হয় সেদিকে ভালোভাবে খেয়াল রাখা জরুরি। রাসুল (সা.) এদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করতে বলেছেন। অকারণে তাদের মেরে ফেলা, তাদের ওপর অতিরিক্ত বোঝা চাপানো, নিজেদের মনোরঞ্জনের জন্য কষ্ট দেওয়াকে তিনি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর অভিশাপ সেই ব্যক্তির ওপর যে অকারণে পশুর অঙ্গহানি ঘটায়।’ (মুসনাদে আহমদ : ৪৩২)।

আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো কারণ ছাড়াই কোনো পাখি হত্যা করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার হিসাব নেবেন।’ (ইবনে মাজাহ : ৫৪৬)

সাধ্যমতো পশু-পাখির আহার যোগানো ও তাদের থেকে উপকৃত হলে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা এসব বাকশক্তিহীন প্রাণীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। সুস্থ অবস্থায় এগুলোতে আরোহণ কর, সুস্থ অবস্থায় আহার কর।’ (আবু দাউদ: ২৫৪৮)।

অন্য একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এক মহিলা একটি বিড়াল বেঁধে রেখে খেতে না দেওয়ায় মারা যায়। ফলে মহিলাটিকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়।’ (বুখারি : ৩৩১৮)

পাখিদের অকারণে তাদের ধরে বন্দি করা ভালো কাজ নয়। তাদের মুক্ত আকাশে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে দেওয়া। হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক সফরে আমরা রাসুলুল্লাহ-এর সঙ্গে ছিলাম। এক জায়গায় আমরা একটি চড়ুই পাখিকে দুটি বাচ্চাসহ দেখতে পেলাম। আমরা বাচ্চা দুটিকে হাতে তুলে নিলাম। ফলে মা পাখিটি অস্থির হয়ে আমাদের মাথার ওপর ঘোরাঘুরি করতে লাগল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘বাচ্চা ছিনিয়ে নিয়ে কে তাকে কষ্ট দিয়েছে? তার বাচ্চা তাকে ফিরিয়ে দাও।’ (আবু দাউদ : ৫৩৫৬)

একবার রাসূলুল্লাহ সা: একটি উটের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন, প্রচুর ক্ষুধার তাড়নায় যার পিঠ পেটের সাথে লেগে গেছে। অনাহারে অপুষ্টিতে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ দৃশ্য দেখে রহমতের নবীর ভীষণ মায়া হলো। সাহাবিদের ডেকে বললেন : ‘এসব বাকশক্তিহীন প্রাণীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। সুস্থ অবস্থায় এগুলোতে আরোহণ করো, সুস্থ অবস্থায় আহার করো’ (আবু দাউদ : ২৫৪৮)।

 
Electronic Paper