ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফুলবাড়ীতে অপহরণের ২০ দিনেও উদ্ধার হয়নি নরসুন্দর

এস এম আসাদুজ্জামান, ফুলবাড়ী
🕐 ৯:০৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৬, ২০২২

ফুলবাড়ীতে অপহরণের ২০ দিনেও উদ্ধার হয়নি নরসুন্দর

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নেওয়াশী বাজারের এক নরসুন্দরকে সেলুনের দোকান থেকে অপহরণের ২০ দিন অতিবাহিত হলেও এখন উদ্ধার হয়নি। ফলে ওই নরসুন্দরের পরিবার চরম দুচিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। অপহৃত ওই নরসুন্দরের নাম বাবলু চন্দ্র শীল (৩৪)। তিনি উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের বোয়াইলভীড় গ্রামের গোপাল চন্দ্র শীলের ছেলে।

এ ঘটনায় গত ২৫ নভেম্বর বাবলু চন্দ্র শীলের স্ত্রী স্বপ্না রানী শীল বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় মুল অপহরণকার পাশবর্তী নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের ঘরজেয়াটারী এলাকার বাহার তালুকদারের ছেলে বাচ্চু তালুকদার (৩৪), একই এলাকার জব্বার আলীর ছেলে আমিনুর রহমান (৩৩) ও ফুলবাড়ী উপজেলার রাবাইতারী এলাকার মৃত আবু তালেবরে ছেলে সিরাজুল ইসলাম পাঠান (৩৫) এর নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৩ জনের নামে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এদিকে অপহরণ মামলা দায়েরের ১১ দিন অতিবাহিত হলেও অপহৃত নরসুন্দর বাবলু চন্দ্র শীলকে উদ্ধার করতে পারেনি। মামলা রেকর্ডের পর থেকে পুলিশ বাবলু চন্দ্র শীলকে উদ্ধার করতে সর্বচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। একই সাথে অপহরণকারীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছেন পুলিশ।


মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৭ নভেম্বর রাতে নেওয়াশী বাজারে বাবলু চন্দ্র শীলের সেলুনের দোকান থেকে আসামীরা তাকে মারপিট ও প্রান নাশের হুমকি দিয়ে মোটর সাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর বাচ্চু তালুকদার ০১৭৮০৭১৭৪৩২ নম্বর থেকে ফোন করে বাবলুর ভাই কৃষ্ণ চন্দ্র শীলকে জানান যে বাবলুকে ডিবি পুলিশ ধরেছে। উদ্ধার করতে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। বাবলুর ভাই কৃষ্ণ চন্দ্র শীল ও কাকাতো ভাই বিশ্বনাথ শীল টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামীরা তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালজ করে। এরপরও টাকা না দিলে ১ নং আসামী বাচ্চু তালুকদার কৃষ্ণ ও বিশ্বনাথকে এলোপাতাড়ী কিলঘুষি মারিয়া নেওয়াশী বাজার থেকে সটকে পড়েন।

বাবলুর ভাই কৃষ্ণ চন্দ্র শীল ও বিশ্বনাথ শীল জানান, ঘটনার পর থেকে আমার ভাইকে অনেক জায়গায় খুঁজেছি। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাইনি। ভাইয়ের খোঁজ না পাওয়ায় তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের কান্না যেন থামানো যাচ্ছে না। যাকেই দেখছেন, তার কাছে স্বামীর সন্ধান চাইছেন। বৃদ্ধ বাবা-মা ছেলের চিন্তায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। অপহরণকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা মুখ খোলার সাহস পাচ্ছিনা।

মামলার বাদী বাবলু চন্দ্র শীলের স্ত্রী স্বপ্না রানী শীল বলেন, স্বামীর সন্ধান চেয়ে থানায় মামলা করেছি। কিন্তু ২০ দিন পার হলেও আমার স্বামীকে উদ্ধার করতে পারেনি। অপহরণকারীরা প্রভাবশালী। যে কোন সময় আমাদের আরও বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। আমি আমার দুই অবুঝ মেয়েকে খুবই নিরাপত্তহীনতা ভুকছি। বার বার সন্তানরা তার বাবাকে না পেয়ে বড় অসহায় হয়ে পড়েছে। সব সময় বলছে মা বাবা কখন আসবে। এভাবে আমার দুই সন্তান তার বাবা কখন আসবে এভাবেই কেঁধে কেঁধে অস্থির হয়ে পড়েছে। তাদেরকে শান্তনা দেওয়া ভাষা নেই। একেকটা দিন খুব কষ্টে যাচ্ছে। আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর অবস্থাও খুবই করণ। তারাও ছেলের শোকে খাওয়া-দাওয়াও ছেড়েছে। সব সময় কান্নাকাটি করছে। তিনি আরও জানান, স্বামীকে ফিরে পেতে পুলিশ প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। সেই সাথে তার স্বামীর অপরহণকারীকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।

ফুলবাড়ী থানার এস আই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, অপহৃত নরসুন্দর বাবলু চন্দ্র শীলকে উদ্ধারের জন্য সব ধরণের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আশাকরি খুব দ্রুত সময়ে বাবলু চন্দ্র শীলকে উদ্ধার করতে পারবো এবং সেই সাথে অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো বলে আমার বিশ্বাস।

 
Electronic Paper