সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
দেশজুড়ে
অভিনব সিন্ডিকেট: সয়াবিন তেলের সঙ্গে ৮ পণ্য কেনা বাধ্যতামূলক
মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ১ মার্চ, ২০২৫, ১:২৪ পিএম
ছবি: মতলব উত্তরের ছেংগারচর বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট।

ছবি: মতলব উত্তরের ছেংগারচর বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় পাইকারি ও খুচরা দোকান গুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট। তেল না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। অনেকে বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল কিনছেন।

এমন সংকটের জন্য বোতল জাত সয়াবিন তেলের ডিলার এবং কোম্পানিকে দোষারোপ করছেন  দোকানি ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, তেলের সঙ্গে একই কোম্পানির সরিষার তৈল, লবন, চা পাতা, সেমাই, ট্যাংক, পোলাও চাল, সুজি, হলুদ ও মসলা না নিলে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। 

কোম্পানি গুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা তাদের যেসব পণ্যের চাহিদা বাজারে নেই, সেসব পণ্য না রাখলে তেল দিচ্ছেন না। এমনকি সয়াবিন তেল বিক্রিতে কোনো ধরনের মুনাফা দিতেও রাজি নন তারা। এজন্য দোকানে তেল রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সর্বশেষ শনিবার (১ মার্চ) উপজেলার ছেংগারচর বাজার এবং বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকান গুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। যারাই তেল কিনতে আসছেন, দোকানিরা বলছেন নেই। ছয়-সাতটি দোকান ঘুরেও তেল পাননি অনেকে। তাদের প্রশ্ন, তেলের কি সংকট চলছে?

অনেকে বড় দোকানে তেল না পেয়ে পাড়া-মহল্লার দোকানে যান। একই অবস্থা দেখে দোকানির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান ক্রেতারা। এমন এক ক্রেতাকে উদ্দেশ্য করে তখন দোকানি বলেছেন, কোম্পানিগুলোর বেঁধে দেওয়া শর্তে রাজি না হওয়ায় তেল দিচ্ছে না। এজন্য দোকানে তেল নেই। 

তেল না পেয়ে ভোগান্তির কথা জানিয়ে ছেংগারচর পৌর এলাকার বলুরচর গ্রামের মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অন্তত ছয়টি দোকান ঘুরেছি। কোনও দোকানে তেল নেই। সবাই বলছেন, নেই-নেই। এটা তো আমাদের জন্য ভোগান্তি। দোকানিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, কারণ কারও দোকানেই তেল নেই। শুধু ছেংগারচর বাজারে নয় উপজেলা সব বাজারের দোকানগুলোতে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে অনেক ক্রেতা মনে করছেন, সংকট। তবে বাস্তবে কোম্পানির বেঁধে দেওয়া শর্তের কারণে তেল রাখছেন না দোকানিরা।

জোরখালী গ্রামের বাসিন্দা মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, আমাদের উপজেলার খুচরা ও পাইকারি দোকানগুলোতে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। সংকট মনে করে আমরা খোলা তেল কিনছি। পরে শুনেছি, সংকট নেই। কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা শর্ত মেনে তেল বিক্রি করছেন। ওই শর্তে তেল কিনলে খুচরা বিক্রেতাদের লাভ হয় না। এজন্য তারা কোনও কোম্পানির তেল দোকানে রাখছেন না।

দোকানে তেল নেই কেন জানতে চাইলে ছেংগারচর বাজারের পাইকারি দোকানি মো. জিয়া ও মো. অপু মিয়া বলেন, তেল রাখতে চাইলে সঙ্গে তাদের কোম্পানির সরিষার তৈল, লবন, চা পাতি, সেমাই, ট্যাংক, পোলাও চাল, সুজি, হলুদ ও মসলা রাখার শর্ত দিচ্ছেন বিক্রয় প্রতিনিধিরা। আবার যত টাকার তেল রাখবো, তত পরিমাণ টাকার চাহিদাহীন পণ্য রাখা বাধ্যতামূলক বলে দিচ্ছেন তারা। এরপর তেলের বোতলের গায়ে যে দাম লেখা, সেই দামে বিক্রি করতে হবে। তাও মানতে রাজি ছিলাম। কিন্তু যেসব পণ্যের ক্রেতা নেই, সেসব পণ্য রাখলে আমাদের তো লোকসান হবে। লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা উল্টো তেল রেখে বাড়তি চাপে পড়তে হচ্ছে। এর চেয়ে বরং ওই টাকার অন্য পণ্য দোকানে রাখলে কিছুটা হলেও লাভ হবে। এজন্য তেল রাখছি না।

একই কথা বলেছেন এই বাজারের খুচরা দোকানি রসুল মিয়াজী বলেন, এক কোম্পানির তেল রাখতে চাইলে সঙ্গে তাদের ৮টি আইটেম নেওয়া বাধ্যতামূলক। অন্য কোম্পানির এক কার্টন সয়াবিন তেল রাখতে হলে এক তাদের কার্টন সরিষার তেলসহ বিভিন্ন পণ্য রাখা বাধ্যতামূলক। আরেক কোম্পানি তাদের পোলাওয়ের চাল-ডাল এবং মিনিকেট চাল রাখার শর্ত দিচ্ছে। এই কারণে বোতলজাত সয়াবিন তেল দোকানে তোলা বন্ধ করে দিয়েছি আমরা।

বোতলের গায়ে লেখা দামে তেল বিক্রি করতে আমরা রাজি উল্লেখ্য করে এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, কারণ মাসিক যারা ক্রেতা আছেন, তাদের সব মালামাল দিতে হয়। তা না হলে প্রতিযোগিতার বাজারে অন্য দোকানে চলে গেলে ক্রেতা হারাতে হয়। ফলে তেল বিক্রিতে লাভ না থাকলেও আমরা রাখতাম। কিন্তু এখন যেসব শর্ত দিচ্ছে কোম্পানিগুলো, তা কোনোভাবেই মানা সম্ভব না হওয়ায় তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছি।

চাঁদপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান জনান, আমরা ইতিমধ্যেই চাঁদপুরের বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করতেছি। সয়াবিন তেলের সাথে অন্যান্য পন্য বাধ্যতামূলক দেওয়া এটি নিয়ম বহির্ভূত কাজ, যারা এই কাজের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি জানান, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।


কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি
জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে : তানভীর হুদা
মৌলভীবাজারে জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের স্মারকলিপি

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close