প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদী থেকে ১৫ কেজি ওজনের ডলফিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বুধবার দুপুরে পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নস্থ কাগতিয়া শাখা খালে ভেসে যাওয়ার সময় গাঙ্গেয় প্রজাতির একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়।
মৃত ডলফিনটি দৈর্ঘ্য পায় ৫ ফুট ও বেড়/প্রস্থ ২৭ ইঞ্চি এবং ওজন প্রায় ১৫ কেজি। ২০১৭ সাল থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত হালদা নদী থেকে ৪৪টি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়। ডলফিনটি পঁচে যাওযায় মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এই বিষয়ে হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাউজান উপজেলার হালদা নদীর শাখা কাগতিয়া খালে ভেসে যাওয়ার সময় একটি গাঙ্গেয় প্রজাতির মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মৃত ডলফিনটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ ফুট ও ওজন প্রায় ১৫ কেজি। ডলফিনটি পঁচে যাওয়ায় রাউজান উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মৃত ডলফিনটিকে মাটি চাপা দেওয়া হয়। এই নিয়ে হালদা নদী থেকে উদ্ধার করা মৃত ডলফিনের সংখ্যা ৪৪ টি।
উল্লেখ্য গত সপ্তাহে ও হালদা নদীর সিপাহিঘাট থেকে ৪৩তম মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয় যার দৈর্ঘ্য ছিল ৫০ ইঞ্চি ও ওজন ১১.৯ কেজি। এই নিয়ে এই বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের এক সপ্তাহে দুটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়। যা হালদা নদীর জলজ বাস্তুতন্ত্রের জন্য উদ্বেগজনক। হালদা নদীর ডলফিন রক্ষায় প্রশাসনের পাশাপাশি সবাইকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, দুপুরে কাগতিয়া শাখা খাল থেকে একটি ডলফিন অর্ধ গলিত ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় উদ্ধার করে পাড়ে তুলে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এটিকে মাটি চাপা দেয়া হয়। তবে শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় নাই। ধারণা করা হচ্ছে যে, কর্ণফুলী নদীর মোহনার দিকে কোথাও ডলফিনটি মারা যেতে পারে। জোয়ারে এটি ভেসে আসে। কর্ণফুলী নদীতে সাম্প্রতিক দূষণ ও জাহাজ বা অন্যান্য নৌযান হতে তেল ছড়িয়ে পড়ার কারণেও ডলফিন মারা যেতে পারে।
তিনি আরো জানান, হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদ রক্ষার জন্য রাউজান-হাটহাজারী উপজেলায় পর্যাপ্ত জনবল সংকট রয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষার জন্য দুই উপজেলায় পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগসহ নিজস্ব নৌযানের ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি। সরকার এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এই আশাবাদ এলাকাবাসীর।
কেকে/ এমএস