শীতকাল এলেই আমরা অনেকেই লক্ষ্য করি, আচানক মিষ্টির প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। শুধু ছুটি বা উৎসবের সময়ে অল্প পিঠা বা মিষ্টি খাওয়ার মত নয়, অনেকের কাছে এই ইচ্ছে যেন আর দমিয়ে রাখা সম্ভবই হয় না। কিন্তু কেন এমন হয়?
দিন ছোট, রাত লম্বা, বাতাস ঠান্ডা—এসব পরিবর্তন শরীরকে সূক্ষ্মভাবে সংকেত দেয় ‘এখন বেশি শক্তি দরকার।’
গবেষকরা বলছেন, ‘শীতকাল আমাদের শুধু ক্ষুধাকে নয়, মেজাজকেও প্রভাবিত করে। ফলে, কার্বোহাইড্রেট বা মিষ্টির আকর্ষণ স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে।’
বিজ্ঞানের মতে, শীতকালে দেহের কোর টেম্পারেচার ঠিক রাখতে বেশি শক্তি লাগে। আর বেশি শক্তির জন্য স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুধা বাড়ে।
এছাড়া শীতকালীন বিষণ্ণতা থাকলে মিষ্টির প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়। তখন মিষ্টি খেলে সাময়িক স্বস্তি আসে, মেজাজ ভালো থাকে।
প্রাচীনকালে শীতকে শক্তি সঞ্চয়ের সময় মনে করা হতো। তখন শরীর বেশি ক্যালোরি খুঁজতো। আজও সেই প্রবৃত্তির জন্য শীতে খাবার, বিশেষ করে মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ দেখা যায়।
মিষ্টি খাওয়ার তাগিদ কমানোর সহজ উপায়-
আলো বেশি নিন : দিনে যত সম্ভব সূর্যের আলো নিন। যদি সূর্য দেখা না যায়, হালকা লাইট থেরাপির ল্যাম্প ব্যবহার করতে পারেন। এটি মেজাজ ঠিক রাখে ও অপ্রয়োজনীয় মিষ্টি খাওয়া কমায়।
পুষ্টিকর খাবার খান : মিষ্টি না খেয়ে পেট ভরাতে গরম স্যুপ, স্টু, শস্য বা সবজি খান। এতে পেট ভরে যায়, আর মিষ্টির ইচ্ছে কমে।
নিয়মিত শরীরচর্চা : প্রতিদিন হাঁটা, হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করুন। এটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে, মেজাজ ভালো রাখে ও মিষ্টির আকর্ষণ কমায়।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন : শীতকালে একাকীত্ব বা বিষণ্ণতা বেশি হতে পারে। সে সময়গুলোতে শখের কাজ করুন, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান বা সৃজনশীল কাজ করুন। তাহলে খাবারের মাধ্যমে আনন্দ খোঁজার প্রয়োজন কমে যাবে।
স্বাস্থ্যকর বিকল্প পাশে রাখুন : বাদাম, উষ্ণ চা, তাজা ফল বা সম্পূর্ণ শস্য হাতের কাছে রাখুন। মিষ্টির আকাঙ্খা সহজে মিটে যাবে।
শীতে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা স্বাভাবিক, কিন্তু আলো, ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার আর স্বাস্থ্যকর বিকল্প রাখলেই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এতে দেহ ও মন দুই-ই সুস্থ থাকবে।
কেকে/এমএ