আগামীকাল শনিবার (২১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গে উচ্চ শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠান হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) দ্বিতীয় সমাবর্তন।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে চলে এসেছে। দেশের নানা প্রান্ত থেকেই শুধ নয়, বিদেশ থেকেও গাউন পরে হ্যাট উড়াতে চলে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা। সুন্দরভাবে সমাবর্তনটি সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। সমাবর্তনের মূল প্যান্ডেলের কাজ ইতোমধ্যে শেষ। খাবার বুথ ও অভিভাবকদের বসার জন্যও নির্ধারিত স্থান প্রস্তুত করা হয়েছে। গাছগুলোতে সাদা চুন দেওয়া হয়েছে। রাস্তাঘাট পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় যেন একদম ঝকঝকে তকতকে করা হয়েছে। ভবনগুলোতে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। এ যেন এক অন্যরকম পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের মাঝে গাউন, হ্যাট, গিফট বক্সও দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় সমাবর্তনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে চলছে উৎসবের আমেজ। সমাবর্তনটিকে আরো প্রাণবন্ত করতে নিয়ে আসা হচ্ছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড শিরোনামহীন।
হাবিপ্রবির উপাচার্য ও আয়োজক কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি এবং চাওয়া ছিল- যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে মাত্র একবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আমরা সমাবর্তনের আয়োজন হাতে নিয়েছি। সব ধরনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা গ্রাজুয়েটদের একটি সুন্দর সমাবর্তন দেওয়ার অপেক্ষায় আছি। আশা রাখছি, আমরা সুন্দরভাবে আয়োজন সম্পন্ন করতে পারব।’
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রোস্তম শাকিল বলেন, ‘২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ২০২০ সালে পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেছি। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া হয় না, বন্ধুদের সাথে দেখা হয় না। সমাবর্তনটি আমার কাছে একটি মিলনমেলা। কতদিন পর বন্ধুদের সাথে দেখা হবে, আড্ডা দিবো। জিয়া হলে যাবো, যে রুমে ছিলাম সেই রুমে যাবো। সে এক অন্যরকম অনুভূতি; যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।’
ইংরেজি বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল করিম বলেন, ‘আকাঙ্ক্ষিত সমাবর্তন পেতে যাচ্ছি। দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সমাবর্তন হতে যাচ্ছে। বন্ধুদের সাথে অনেক দিন পর দেখা হবে। পূর্বের স্মৃতি স্মরণ হবে,আড্ডা হবে। একদিন আগে আমাদের একটি গেট টু গেদারও হবে। সবমিলিয়ে দারুণ লাগছে।’
ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. জাকারিয়া হোসেন বলেন, সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষকদের সাথে দেখা হবে। হাতে মূল সনদ পাব- সবকিছু মিলে অনেক ভালো লাগছে।’
মার্কেটিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোছা. উম্মে কুলসুম আশা বলেন, ‘আমাদের ২০ ব্যাচের জন্য এই সমাবর্তন অনেক স্পেশাল। কারণ গ্রাজুয়েশন শেষ করেই সমাবর্তন পেতে যাচ্ছি, মূল সনদ হাতে পেতে যাচ্ছি। এদিকে শিরোনামহীন ব্যান্ড আসছে সবমিলিয়ে আলাদা একটা এক্সাইটমেন্ট কাজ করছে।’
কৃষি অনুষদের ২০ ব্যাচের নাফিসা শামীম লুইবা বলেন, গ্রাজুয়েশন শেষ করেই গাউন পরে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারবো তা ভাবতেই ভালো লাগছে। এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের অনুষদের শিক্ষকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। সমাবর্তনের দিনে অনেক সিনিয়র ভাই আপুরা আসবেন তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হবে বিষয়টি ভালো লাগবে।’
নবীন শিক্ষার্থী পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২৩ ব্যাচের মো. বাপ্পি মিয়া বলেন, ‘সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় নতুন সাজে সেজে উঠছে। গ্রাজুয়েশন শেষ না করেও নিজেকে সমাবর্তনের অংশ মনে হচ্ছে। অনেক সিনিয়র ভাই-আপুরা আসবেন। তাদের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাব, ক্যারিয়ার বিষয়ে জানতে পারবো। আশা রাখবো আমরাও যখন গ্রাজুয়েশন শেষ করবো দ্রুত সময়ের মাঝে আমরাও সমাবর্তন পাব।’
কেকে/ এমএ