চাঁদপুরের মতলব উত্তরের দক্ষিণ টরকী গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ সুবর্ণা আক্তারকে (২১) স্বামী টিপু মিয়াসহ তার পরিবারের নির্যাতনের জেরে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকালে উপজেলার দক্ষিণ টরকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় জনসাধারণ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘যৌতুকের দাবিতে দীর্ঘদিন সুর্বণা আক্তারকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল টিপু ও তার পরিবারের সদস্যরা। নিয়মিত মারধর, গালিগালাজ ও টাকা আনার চাপ সহ্য করতে না পেরে গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে সুর্বণা কীটনাশক পান করে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মামলার বাদী সোনিয়া আক্তার, নজরুল ইসলাম সরদার, সুমি বেগম, শাহিনুর, রিপন, জাহিদসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
তারা বলেন, ‘আমরা সুবর্ণার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। টিপু প্রধান নেশাগ্রস্ত, নরপিশাচ। শুধু টিপু নয় তার পরিবারের যে সদস্যরা এ নির্যাতনে জড়িত, সবার দ্রুত বিচার ও ফাঁসি চাই।’
মানববন্ধনস্থলে বারবার স্লোগান ওঠে ‘ফাঁসি চাই! ফাঁসি চাই! সুবর্ণার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই!’
স্থানীয়দের দাবি, সুর্বণা ছিল অন্তঃসত্ত্বা। তাকে নির্যাতন করে এমনভাবে পথহারা করে দেওয়া হয়েছিল যে, সে বাধ্য হয়ে প্রাণ দিয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যারই সামিল।
মানববন্ধনকারীরা দ্রুত বিচার, সব আসামির গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) মতলব উত্তর থানায় ৩০৬/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন ভিকটিমের বড় বোন সোনিয়া আক্তার। মামলা দায়েরের পর প্রধান আসামি টিপু মিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদীপ মন্ডল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো অপরাধীই আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।’
কেকে/এমএ