কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভায় বকেয়া বেতন নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে কর্মচারীর হামলার শিকার হয়ে শহিদুল আলম (৫৭) নামের এক গাড়িচালকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।বুধবার ১৯ (নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌর ভবনের একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে অভিযুক্ত সার্ভেয়ারের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায় এবং পৌর ভবনের প্রধান ফটক আটকে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
মারা যাওয়া শহিদুল আলম পৌর এলাকার শেরকান্দি মহল্লার বাসিন্দা। অভিযুক্ত পৌরসভার সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলামও একই এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।
শহিদুল আলমের মেয়ে সুবর্ণা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, “বড় কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন পেলেও আমার বাবার মতো ছোট কর্মচারীদের বেতন দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া। আজ বেতন চাইতে গেলে সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলাম বাবাকে কিলঘুষি ও লাথি মেরে হত্যা করে। পরে লাশ ১০১ নম্বর কক্ষে আটকে রাখা হয়। আমি মামলা করব, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।”
পুলিশ ও পৌরসভার কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, প্রথম শ্রেণির কুমারখালী পৌরসভার ৫৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৪২ মাসের বকেয়া বেতন মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। আজ সকালে বেতনের দাবিতে শহিদুল বিভিন্ন কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। সার্ভেয়ার ফিরোজুলের কক্ষ ১১৫ নম্বর কক্ষটি বন্ধ করতে গেলে তাঁদের মধ্যে তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তি হয়।
পরে দুজনকেই পৃথক কক্ষে আটকে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর শহিদুলকে অচেতন অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পৌরসভার বাজার পরিদর্শক নুর ইসলাম বলেন, “শুধু ধস্তাধস্তি হয়েছিল, মারামারি হয়নি। শহিদুল হার্টের রোগী ছিলেন, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে যেতে পারেন।”
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা ফিরোজুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়। জানালা, মিটার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বাড়ি ভাঙচুর ঠেকায়।
কুমারখালী থানার ওসি খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, “ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। বকেয়া বেতন নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত বলে ধারণা।” মরদেহ কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ারদার বলেন, “বেতন নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা থেকে অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তে প্রকৃত বিষয় জানা যাবে।”
কেকে/লআ