গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়েছেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল। তিনি দৈনিক ভোরের কাগজের অনলাইন হেড এবং অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে তাকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয় এবং প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ফেসবুক পোস্টে সোহেল তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, বিনা অপরাধে প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা ডিবি হেফাজতে থাকার পর তারা আমাকে সসম্মানে বাসায় পৌঁছে দিয়েছে।’
তিনি আরো জানিয়েছেন, ‘গত রাতে ডিবি প্রধানের সঙ্গে কথা বলার অজুহাতে আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু আমাকে কেন আটক করা হয়েছিল, সেটা আমি জানতাম না, এবং ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও কিছু বলতে পারেননি।’
সোহেল তার পোস্টে আরো উল্লেখ করেছেন, তাকে আটক করার পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করা, যা আগামী দিনে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি) আয়োজন করতে যাচ্ছিল। তিনি জানান, ‘এই প্রেস কনফারেন্সে আমি মিডিয়া পরামর্শক হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল এই প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করা, কিন্তু তাদের জন্য আফসোস, যে উদ্দেশ্যে তারা এটি বন্ধ করতে চেয়েছিল, সেটি এখন দেশের সবাই জানে।’
তিনি আরো দাবি করেন, সরকারের একটি উপদেষ্টার ইশারায় তাকে আটক করা হয়েছিল, যারা ৯ জন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে মনোপলি ব্যবসা করার সুযোগ দিতে চেয়েছিল।
সোহেল জানান, ‘এটি দেশের মুক্ত বাণিজ্য নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ২৫ হাজার মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে পথে বসানোর গভীর চক্রান্ত চলছে।’
ফেসবুক পোস্টে সোহেল লিখেছেন, ‘একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে সরকার কেন ভয় পায়? শুধুমাত্র একটি প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করতেই আমাকে গভীর রাতে জোর করে তুলে নেওয়া হলো?’
তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘যারা মুখে বাকস্বাধীনতার কথা বলেন, তাদের কি এইভাবে সাংবাদিকদের বাকরুদ্ধ করার চেষ্টা করা উচিত?’
শেষে সোহেল তার মুক্তির জন্য শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন- ‘বিভিন্ন বন্ধু, সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং সংবাদমাধ্যমের সহযোগিতার কারণে আমি দ্রুত মুক্তি পেয়েছি। তাদের এই সমর্থনেই আমি মুক্তি পেয়েছি।’
এ ঘটনায় বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদ এবং উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে বাকস্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কেকে/এআর