রাজশাহীতে বিচারকের ছেলে তাওসিফ রহমান হত্যা মামলার আসামি পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় গণমাধ্যমে ভিকটিমকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাওয়ায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে তলব করেছেন আদালত।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজশাহীর রাজপাড়া থানার আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশিদ এ আদেশ দেন। আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে পুলিশ কমিশনারকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতের আদেশে বলা হয়, পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় আসামি লিমন মিয়া বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভিকটিমকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন। আদালত মনে করেন, এটি সুপ্রিম কোর্টের আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বনাম রাষ্ট্র (৩৯ বিএলডি ৪৭০) মামলার নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামিকে গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় আরএমপি কমিশনারের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার কারণ দর্শানোর জন্য তাকে তলব করা হয়েছে।
গত ১৩ নভেম্বর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের ১৭ বছর বয়সী ছেলে তাওসিফ রহমানকে নগরীর ডাবতলা এলাকার বাসায় ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন লিমন মিয়া। এ সময় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকেও গুরুতর আহত করা হয়। ঘটনার পরপরই লিমনকে গ্রেফতার করা হয় এবং বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই ঘটনায় শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিহত তাওসিফের বাবা মহানগর দায়রা জজ আব্দুর রহমান বাদী হয়ে রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় লিমন মিয়াকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, লিমন সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য এবং বিচারকের পরিবারের পূর্বপরিচিত ছিলেন। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
আদালতের এ তলব বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, আইনের শাসন ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মেনে চলার গুরুত্ব আবারও প্রতিষ্ঠিত হলো এই আদেশে।
কেকে/ আরআই