আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) আসনে রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীতা ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকাণ্ডকে ঘিরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার চিত্র এখন প্রকাশ্য।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকালে মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রার্থী ও দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন ৭ নভেম্বর তানভীর হুদার জনসভাকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আমি আমার নেতাকর্মীদের থামিয়ে রেখেছি, না হলে এলাকায় রক্তের বন্যা বয়ে যেত।’
তার এই বক্তব্য মুহূর্তের মধ্যেই এলাকাবাসীর মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি করে। অনেকেই একে রাজনৈতিক উস্কানি এবং হুমকি হিসেবে দেখেন। তার এই বক্তব্য মতলবের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে বলে অনেকেই মনে করেন।
এর আগের দিন শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকালে মতলব উত্তর উপজেলার বাগানবাড়ী আইডিয়াল একাডেমি হাইস্কুল মাঠে একই দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত বিএনপির আরেকটি বিশাল জনসভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক তথ্য সংস্থাপন প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত নুরুল হুদার জ্যেষ্ঠপুত্র জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হুদা।
তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণা পর্যন্ত আমরা তারেক রহমান সাহেবের ৩১ দফার বার্তা নিয়ে বিএনপি এবং ধানের শীষের পক্ষে জনসাধারণের সমর্থন অর্জনের লক্ষ্যে জনগণ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মতলবের মাটিতে কাজ করে যাবো।’
তানভীর হুদা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রার্থীর তালিকা প্রকাশের পর থেকেই মতলবকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে।’
তিনি জানান, দুই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সম্ভাব্য প্রার্থী শুক্কুর পাটোয়ারী, সরকার শামীম ও আমার বিলবোর্ড-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। ছেংগারচর বাজারে বিএনপির অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রতিহিংসামূলক কাজ এলাকায় শুধু অপ্রত্যাশিত উত্তেজনাই সৃষ্টি করবে।’
জালাল উদ্দিনের রক্তের বন্যা সংক্রান্ত বক্তব্যকে উস্কামূলক মন্তব্য হিসেবে দেখছেন অনেক স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
তাদের মতে, এটি মতলব উত্তর-দক্ষিণের বিএনপি অঙ্গনে মনোনয়ন সংক্রান্ত বিতর্কেরই প্রতিফলন।
রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, চাঁদপুর-২ আসনে বিএনপির প্রার্থীতা নিয়ে এই অস্থিরতা যদি দ্রুত নিরসন না হয়, তাহলে নির্বাচনের আগে তৃণমূল সংগঠনে আরও ভাঙন দেখা দিতে পারে।
কেকে/এমএ