সোনাগাজীতে পরকীয়ার ভিডিও ধারণকে কেন্দ্র করে মো. সুজন নামে এক অটোরিকশা চালককে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে সোনাগাজী উপজেলার জমাদার বাজার এলাকায় খুনিদের ফাঁসির দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আসিফ রবিন বলেন, “আমরা সুজন হত্যার বিচার দাবি করছি। সুজন একজন নিরীহ লোক ছিলেন। যে ভিকটিম ছিল মহিলা, সে ছিল একজন দেহ ব্যবসায়ী। সুজন তার আশপাশের এসব দেখেই প্রতিবাদ করেছে। এটা কিন্তু তার অন্যায় নয়। আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। সে ছিল একজন প্রতিবাদকারী। সে প্রতিবাদ করার কারণেই আমাদের ছেড়ে আজকে চলে যেতে হয়েছে। আমরা এ হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই।”
চর চান্দিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এনামুল হক বলেন, “যে ঘটনার জন্য খুন হয়েছে এটা মোটেই কাম্য নয়। পরকীয়ায় বাধা দিতে গিয়ে সুজন খুন হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং খুনিদের শাস্তি দাবী করছি।”
জেলা তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাজাহান ফিরোজ বলেন, “অবৈধ প্রক্রিয়ার কারণে এ হত্যাকান্ড হয়েছে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, সুজন হত্যার সাথে জড়িতদের ফাঁসি চাই এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।”
সুজনের মা রহিমা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার একমাত্র ছেলে, আমাকে এখন মা বলে ডাকার আর কেউ নাই। আমার ঘরে বাতি দেয়ার নিশান নাই। যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।”
সুজনের বাবা মো. মোস্তফা বলেন, “একটা পরকীয়াকে কেন্দ্র করে, কোন দেশ, প্রশাসন কাউকে না জানিয়ে ঘর থেকে এনে দা দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ছেলে মারা গেছে দুঃখ করি না তবে আর যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আমি এর সঠিক বিচারের মাধ্যমে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।”
এসময় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম হোসেন মিসকিন, দক্ষিণ চর সাহাভিকারী প্রাচীন সমাজের সহসভাপতি বাহার মিয়া, আলহাজ্ব চান মিয়া, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুর আলম রিয়াদ, বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ এলাকার দুই শতাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, অনৈতিক কাজে বাধা ও ভিডিও ধারণকে কেন্দ্র করে রোববার রাত ১০টার দিকে সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরসাহাভিকারী গ্রামের জমাদার বাজার সংলগ্ন রাসেলের কলোনীতে মো. সুজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় প্রধান আসামি মো. মামুন হোসেন, তার স্ত্রী আসমা আক্তার, মামুনের শাশুড়ি লিপি আক্তার ও জামসেদ আলম নামে এক যুবকসহ চারজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। নিহত সুজন উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরসাহাভিকারী গ্রামের মো. মোস্তফার ছেলে।
কেকে/ আরআই