‘কাপড় টানিয়ে শৌচাগার, পরিবার নিয়ে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস’ শিরোনামে গত মাসের ২ অক্টোবর জাতীয় দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা রহমানের।
পরে ইউএনও সেই অসহায় বৃদ্ধ আবুল কাশেমের পরিবারের জন্য স্বাস্থাসম্মত একটি শৌচাগার নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জনতার ঈশ্বরগঞ্জ’র স্বেচ্ছাসেবকদের।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ইউএনও সানজিদা রহমানের অর্থায়নে শৌচাগারটি ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে পরিবারের হাতে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে তিন শতাংশ জায়গায় টিনের মাচাতে পাটশোলার বেড়ায় তৈরি ঝুপড়িতে বসবাস করতেন আবুল কাশেম, তার স্ত্রী ও চার সন্তান। রোদ, বৃষ্টি ও কুয়াশা থেকে রক্ষা পেতে ঘরে কাপড়ের শামিয়ানা টানা ছিল। আগে মলত্যাগের জন্য কাপড় মুড়িয়ে তৈরি শৌচাগার ব্যবহার করতেন তারা। সুপেয় পানিরও ব্যবস্থা ছিল না। এর আগে সংগঠনটি পরিবারের জন্য একটি টিউবওয়েলও নির্মাণ করেছিল।
শৌচাগার পেয়ে আবুল কাশেম বলেন, “পেশায় আমি রাজমিস্ত্রির যোগালি করতাম। কিন্তু স্টোক করার পর থাইক্যা আর কোন কামকাজ করতে পারি না। বউ-পোলাপান লইয়্যা থাকার বালা (ভালো) একটা ঘরও করার সুযোগ পাইছি না। বালা একটা টয়লেটও আছিন না (ছিলোনা)। পানি খাওনের একটা কলও (টিউবওয়েল) আছিন না। গ্রামের মানুষের কাছে হাত পেতে এখন কপালে ভাত জুটে। এই অবস্থায় ইউএনও ম্যাডাম আমারে ভালো একটা টয়লেট করে দিছেন। শুকনা খাবারও দিয়েছেন। আল্লাহ ম্যাডামের মঙ্গল করুন, মন থাইক্যা এই দোয়া করি।”
ইউনিয়ন নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা রহমান বলেন, “বৃদ্ধ আবুল কাশেম চাচার বিষয়টি যখন আমার নজরে আসে মানবিক দিক বিবেচনায় স্বাস্ব্যসম্মত শৌচাগারের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এর আগে পরিবারটিকে শুকনা খাবারও দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাজ মানুষের সেবা করা। সেই সেবা যদি সঠিক মানুষকে করতে পারি তখন আত্মতৃপ্তি পাই।”
কেকে/ আরআই