ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে হবিগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে আলোচিত আসন এখন নবীগঞ্জ-বাহুবল নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ-১ আসন। নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিএনপি সারাদেশে ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করায় নেতাকর্মীদের মধ্যে গভীর হতাশা নেমে এসেছে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশের সময় জানান, হবিগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে। এই ঘোষণার পর থেকেই নবীগঞ্জ ও বাহুবল জুড়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়।
অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত প্রার্থী ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই আসনে মনোনয়ন নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। দলের কয়েকজন ত্যাগী ও যোগ্য নেতা থাকা সত্ত্বেও আলোচনায় রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়ার পুত্র ড. রেজা কিবরিয়ার নাম। গুঞ্জন রয়েছে, তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে বাগিয়ে নিতে পারেন বিএনপির মনোনয়ন।
আলোচনায় রয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. খালেদ মহসিনও। অপরদিকে, গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে জোট হলে বিএনপি এই আসন ছেড়ে দিলে ভাগ্য খুলতে পারে গণঅধিকার পরিষদের মনোনয়নপ্রত্যাশী আবুল হোসেন জীবনের। এ নিয়েও চলছে বিশ্লেষণ।
হবিগঞ্জ-১ আসনে ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির শেখ সুজাত মিয়া প্রথমবারের মতো জয়লাভ করেন। দেওয়ান ফরিদ গাজীর মৃত্যুর পর ২০১১ সালের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে পরাজিত করে ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী হয়ে চমক সৃষ্টি করেন শেখ সুজাত মিয়া।
১৯৯১ সাল থেকে নবীগঞ্জে বিএনপিকে সংগঠিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ সুজাত মিয়া। এছাড়াও নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা শাহ মোজাম্মেল নান্টু, যুক্তরাজ্য যুবদল নেতা তালহা চৌধুরী, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক সভাপতি দেওয়ান মুকাদ্দিম চৌধুরী নিয়াজ, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোশাহিদ আলম মুরাদ ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা মুখলিছুর রহমান— তারা সবাই ত্রয়োদশ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলছেন, “এই আসনে বিএনপির শক্ত সাংগঠনিক ভিত্তি রয়েছে। দলীয় প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় মাঠের কর্মীরা হতাশ। তাই স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য ও দীর্ঘদিন দলের জন্য কাজ করা নেতাকে মনোনয়ন দিতে হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হবিগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী ঘোষণার বিলম্ব মাঠ পর্যায়ে বিএনপির প্রস্তুতিতে প্রভাব ফেলবে। তবে চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণার সময় স্থানীয়ভাবে বিএনপির কোনো যোগ্য নেতাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি তুলেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
কেকে/ আরআই