সিরাজগঞ্জে দ্রুত বাড়ছে এইচআইভি এইডস আক্রান্তের সংখ্যা। জেলায় চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ২৫৫ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭৩ শতাংশই মাদক গ্রহণকারী।
চিকিৎসকরা বলছেন, একই সিরিঞ্জে মাদক নেওয়া, যৌন সম্পর্কে সচেতনতার অভাব, রোগের তথ্য গোপন রাখা এবং তরুণদের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার মূল কারণ।
সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এইচআইভি টেস্টিং অ্যান্ড কাউন্সেলিং সেন্টার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখানে এইচআইভি পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম বছর চারজনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হলেও, পরের বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় আটজন। ২০২২ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ৮১-তে পৌঁছায়। এরপর ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তুলনামূলকভাবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও, চলতি বছর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৫ জনে যা আগের সব বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি।
কাউন্সিলিং সেন্টারের কাউন্সেলর মাসুদ রানা জানান, “শনাক্তদের মধ্যে ১৮৭ জন মাদকসেবী, ৩৫ জন সাধারণ মানুষ, ২৯ জন স্কুল/কলেজ পড়ুয়া তরুণ এবং চারজন যৌনকর্মী। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২৬ জন। বাকিরা নিয়মিত বিনামূল্যে ওষুধ এবং কাউন্সিলিং সেবা নিচ্ছেন।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথম পরীক্ষায় ফলাফল পজিটিভ এলে আমরা রোগীকে আবারও রিটেস্টের জন্য ডাকি এবং কাউন্সেলিং করি, যাতে তারা চিকিৎসা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হয় ও সমাজে মানসিকভাবে টিকে থাকতে পারে।”
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুন নাহার বলেন, “একই সিরিঞ্জে মাদক গ্রহণের মাধ্যমে ভাইরাসটি রক্তের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। শনাক্তদের অধিকাংশই মাদকসেবী হওয়ায় এ প্রবণতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আক্রান্তদের শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সহায়তাও দিচ্ছি, যাতে তারা সমাজে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে পারে।”
এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এইচ. এম. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ইনজেকশন জাতীয় মাদকের বেচাকেনা ও ব্যবহার রোধে নিয়মিত অভিযান চলছে। তরুণ সমাজকে এই বিপজ্জনক নেশা থেকে দূরে রাখতে সচেতনতা বাড়াতে হবে।”
কেকে/এজে