জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামি বার্জিস শাবনাম বর্ষা, মো. মিহির রহমান ও ফারদিন আহমেদ আয়লানকে আদালতে তোলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকাল আড়াইটার দিকে তাকে আদালতে তোলা হয়।
এ সময় জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকা মহানগর মেট্রোপলিটন আদালত চত্বরে মুহুর্মুহু শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে জুবায়েদ হত্যা জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা—‘আমার ভাই খুন কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বিপ্লবে বলিয়ান, নির্ভীক জবিয়ান’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনিদের ফাঁসি চাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাই কবের, খুনি কেন বাহিরে’ ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনি তোদের রক্ষা নাই’, ‘জুবায়েদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘উই ওয়ান্ট-উই ওয়ান্ট, জাস্টিস, জাস্টিস’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিলে জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘জোবায়েদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকলকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন নৃশংস কাজের সাহস না পায়।’
জবি ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক সাখাওয়াতুল ইসলাম খান পরাগ বলেন, ‘এক মাসের মধ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি পুরান ঢাকায় জবিয়ানদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ প্রশাসনকে গ্রহণ করতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জবি শাখা ছাত্রদলের ১ম যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন সরদার, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমেদ, জবি শাখা ছাত্র অধিকারের সভাপতি এ কে এম রাকিব, আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির সংগঠক মাসুদ রানাসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বংশাল থানার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পরদিন সোমবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ভাংনা এলাকা থেকে মাহির রহমান, একই রাতে বর্ষার নিজ বাসা থেকে তাকে এবং পরে শান্তিনগর চামেলীবাগ এলাকা থেকে ফারদীন আহম্মেদ আয়লানকে গ্রেপতার করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, জোবায়েদ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সাথে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।
গত এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামের বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। ওই ছাত্রী বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।
এদিন আনুমানিক বিকাল ৪টার ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় তিনি খুন হন। বাসার নিচ তলার সিড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিড়িতে রক্ত পড়েছিল। তিন তলার সিড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এদিন রাতেই আটক করা হয় জোবায়েদের ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষাকে।
কেকে/এজে