নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্মম নির্যাতনে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর)। ছয় বছর পার হলেও এখনো গ্রেফতার হয়নি পলাতক আসামিরা, কার্যকর হয়নি আদালতের দেওয়া রায়। এতে শোক আর ক্ষোভে দিন কাটাচ্ছেন আবরারের মা-বাবা।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। তার আগে বিকেলে কুষ্টিয়া থেকে নিজ হাতে খাইয়ে ঢাকামুখী বাসে তুলে দিয়েছিলেন মা রোকেয়া খাতুন। সেটিই ছিল মা-ছেলের শেষ দেখা।
আজও কুষ্টিয়ার পিটিআই সড়কের পাশে আবরারের ঘর ঠিক আগের মতোই গুছানো। টেবিলে রাখা আছে ব্যবহৃত মোবাইল, ল্যাপটপ, বই আর খাতাগুলো। শোকেসে সাজানো প্রিয় স্মৃতিচিহ্ন। শুধু নেই আবরার— আছে তার না-ফেরার ব্যথা, শূন্যতা আর দীর্ঘশ্বাস।
মৃত্যুর ছয় বছর পরও রায় কার্যকর না হওয়ায় শোক ও ক্ষোভে পুড়ছেন আবরারের বাবা-মা।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘যে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন নিয়ে আমার ছেলে শহীদ হয়েছে, সেই স্বপ্ন পূরণে আমরা এখনো অপেক্ষায়। পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকর করার দাবি জানাই।’
এদিকে, আবরারের মা রোকেয়া খাতুন বর্তমানে ঢাকায় থাকছেন ছোট ছেলে আবরার ফাইয়াজের সঙ্গে। ফাইয়াজ এখন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের। গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘শহীদ আবরার ফাহাদের আত্মত্যাগ আমাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রেরণা দেয়। পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে রায় কার্যকর করার দাবি জানাই।’
গ্রন্থাগারের উপদেষ্টা সুলতান মারুফ তালহা বলেন, ‘শহীদ আবরার ফাহাদ শুধু একটি নাম নয়, একটি স্ফুলিঙ্গ— যে অন্যায় ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস শিখিয়েছে। তার খুনিরা এখনো বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে— এটা আমাদের জাতির জন্য লজ্জাজনক।’
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে সংঘটিত এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড আজও নাড়িয়ে দেয় পুরো জাতিকে। আবরারের স্বজন ও এলাকাবাসী দ্রুত রায় কার্যকরের জোর দাবি জানিয়েছেন।
কেকে/ আরআই