জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম মোসলেমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছরীন বেগম পান্নার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে গড়িমসি করছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (টিইও) নুরুল আমিন। তদন্তের এক মাস ২৫ দিন পার হলেও এখনও পর্যন্ত প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়া হয়নি।
অভিযোগ উঠেছে— প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ধামাচাপা দিতেই ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্ব করছেন নুরুল আমিন।
গত ৬ আগস্ট দৈনিক খোলা কাগজে “৬ শিক্ষকের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই একজনও, পতাকা অর্ধনমিত” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীও উপস্থিত না থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
সেদিন সরেজমিনে গিয়ে প্রতিবেদক অভিযোগের সত্যতা পান। বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “ম্যাডাম উপজেলা শিক্ষা অফিসে গেছেন।”
তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী না থাকার কারণ সম্পর্কে তারা কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল আমিন তখন বলেন, “ঐ বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী আহসান বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেন এবং ১০ আগস্ট প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্তের নির্দেশ দেন। নির্দেশনার পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সরেজমিনে গিয়ে তদন্তও সম্পন্ন করেন।
তবে দীর্ঘ এক মাস ২৫ দিন অতিক্রান্ত হলেও জেলা শিক্ষা অফিসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
চাইলে নুরুল আমিন বলেন, “প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগটি সরেজমিনে তদন্ত করেছি এবং অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছি।”
কিন্তু মোহাম্মদ আলী আহসান ভিন্ন তথ্য দিয়ে বলেন, “উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কোনো তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দেননি। প্রতিবেদন পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা বলছেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বিলম্বের কারণে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’
তারা বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বলে রাখা ভাল, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল আমিন ২০১৯ সালের ১৩ মে থেকে মাদারগঞ্জে দায়িত্ব পালন করছেন।
কেকে/ এমএ