জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ইজিবাইক চালক খোকন মিয়াকে (৫৫) নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) মধ্যরাতে উপজেলার মগটুলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. নজরুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা ও ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নজরুলের সাথে কোন সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন তালুকদারে সই করা চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক একেএম সোজা উদ্দিনের সমন্বয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
শনিবার বাদ এশা খোকন মিয়ার জানাজার পর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শনিবার সকালে নিহতের ছেলে বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে উপজেলা মগটুলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নজরুল ইসলামসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে সোহাগ মিয়া (২৫), জোসনা আক্তার বেলিকে (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাত ১০ টার দিকে মগটুলা ইউনিয়নের কর্মা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ কল পেয়ে খোকনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় পুলিশ। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহত খোকন মিয়া কর্মা গ্রামের কছুম উদ্দিনের (৭৫) ছেলে।
কছুম উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্রদল নেতা নজরুলের নেতৃতে তার চার ভাই ও ভাড়াটে গুন্ডাসহ ১০-১৫ জন মিলে দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার ছেলে খোকনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমার ছেলের বাম হাত কুপিয়ে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। মাথায় তিনটা কোপ দিয়েছে, দুই পা ভেঙ্গে থেঁতলিয়ে ফেলছে। হত্যার পর বাড়িঘর লুট করে নিয়ে যায় নজরুলরা। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের বাড়িতে গেলে তাদের বাড়ি তালাবন্ধ পাওয়া যায়। তাদের ব্যবহৃত একাধিক মোবাইল নম্বরে কল করলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার এজহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
কেকে/এমএ