বিদ্যমান সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা ২০০৯ বহাল রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের (বিএফএ) দিনাজপুর জেলা ইউনিট।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন।
তিনি বলেন, সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা ২০০৯ বহাল রয়েছে এবং এটি সুষ্ঠভাবে সার বিতরন ও বিপননের জন্য যুগোপযোগী এবং পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। বেশি সংখ্যক ডিলার এবং বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হলে সারের মনিটরিং ব্যবস্থা দূর্বল হবে এবং কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। একই পরিবারের বাবা-ছেলে, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-ভাই পৃথক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকা বহাল রাখতে হবে। নয়তো প্রায় ৩০ বছল ধরে যারা এই ধরনের ব্যবসা করছেন তাদের বিভিন্ন ব্যাংকের গৃহীত ঋণ ও ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপিত গোডাউন ও শো-রুমসহ অন্যান্য বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং এর সাথে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
তিনি আরও বলেন, সারের দাম উর্দ্ধমুখী, কেন দাম বৃদ্ধির কথা উঠছে এই কারণ ভেবে দেখা দরকার। একজন ডিলারের পক্ষে নিজে সব মোকামে গিয়ে সার উত্তোলন করে ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়ে এসে কৃষকদের মধ্যে সার সঠিক সময়ে ও সুষ্ঠভাবে বিতরন করা সম্ভব নয়। অবশ্যই মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে সার উত্তোলন ও বিতরনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়াও সার বিতরন ও বিপননে আবশ্যিকভাবে খুচরা বিক্রেতা থাকতে হবে।
মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ১৫ বছর আগে নির্ধারিত প্রতি বস্তা সারের ১০০ টাকা কমিশন বহাল রয়েছে, বস্তাপ্রতি এই কমিশন বৃদ্ধি করে ২০০ টাকা করতে হবে। কারণ জ্বালানী তেলের দাম বিগত ১৫ বছরে কয়েক দফা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও ব্যাংক সুদ, গুদাম ভাড়া কর্মচারী ব্যয়, লোড-আনলোডসহ আনুসাঙ্গিক যাবতীয় খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার পরও বিক্রয় কমিশন বৃদ্ধি করা হয়নি। সরকার কর্তৃক ভর্তুকি মূল্যে কৃষক পর্যায়ে সার বিক্রয় করা হয়। এ ধরনের সারের ওপর কোন ভাবেই উৎস কর নির্ধারন করা যৌক্তিক নয়, আগেও ছিল না। বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন। না হলে সারের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, টিএসসি সারের বরাদ্দ বাড়াতে হবে কিংবা একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে। সামান্য টিএসসি সার বরাদ্দ দিয়ে কৃষকের সম্পূর্ণ চাহিদা পুরন করা সম্ভব না। এজন্য কৃষকদের মাঝে বিক্রয় ও বিতরনে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিসিআইয়ের উৎপাদিত টিএসপি ও ডিএপি সার সঠিক সময়ের মধ্যে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আমদানিকারক পর্যায়ে বরাদৃদ্দকৃত নন-ইউরিয়া সার জেলা থেকে নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সারের যে কোন নীতিমালা করার পূর্বে মাঠ পর্যায় হতে প্রতিটি জেলা-উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের ও বিএফএ’র প্রতিনিধিদের মতামত নিতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি জাহিদ আলী, মশিয়ার রহমান, যুগ্ম সম্পাদক জহুরুল হক খান, দপ্তর সম্পাদক আকবর হোসেন, সদস্য মকসেদুর রহমানসহ অন্যান্য ডিলাররা।
কেকে/ আরআই