“প্রতিবন্ধী তরুণদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে উন্মুক্ত অমিত সম্ভাবনা ও শক্তি গড়ে তুলবে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যখাত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ”- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ‘অপরাজেয় তারুণ্য’র উদ্যোগে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় প্রতিবন্ধী তরুণদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ আবু সাঈদ চত্বরে অবস্থিত প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা কর্মসূচির (আরএইচস্টেপ) অপরাজেয় তারুণ্য কার্যালয়ে এ কর্মশালার আয়োজন হয়।
অপরাজেয় তারুণ্য’র ইউওয়াইপি প্রজেক্ট অফিসার অনিমেষ রায়ের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অতিথি ছিলেন প্রতিবন্ধী সাহায্য ও সেবা কেন্দ্র রংপুরের ক্লিনিক্যাল ফিজিওথেরাপিস্ট জিনিয়া পারভীন, পরশ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মো. আতিয়ার রহমান, কালের কণ্ঠের বেরোবি প্রতিনিধি আবুল খায়ের জায়ীদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অপরাজেয় তারুণ্য রংপুরের ইয়ুথ অফিসার স্বর্ণালী আচার্য।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যখাতে প্রতিবন্ধী তরুণদের বঞ্চনা ও বৈষম্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবাখাত গড়ে তুলতে করণীয় তুলে ধরা হয়। পরে অংশগ্রহণকারীরা স্বাস্থ্যসেবায় অন্তর্ভুক্তির প্রতিবন্ধকতা ও নিজস্ব দাবি উপস্থাপন করেন। তাদের দাবির মধ্যে ছিল বিনামূল্যে বা ভর্তুকিমূল্যে সেবা প্রদান, সচেতনতা ক্যাম্পেইন বৃদ্ধি এবং প্রতিবন্ধীবান্ধব যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
অনুষ্ঠানের জিনিয়া পারভীন বলেন, ‘স্বাস্থ্যব্যবস্থার যেকোনো নীতি বা পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী তরুণদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের জীবনের প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জগুলোকে বোঝা ছাড়া টেকসই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলেই স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সার্বজনীন এবং সবার জন্য সমানভাবে গ্রহণযোগ্য করা যাবে।’
মো. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘প্রতিবন্ধী তরুণরাই সবচেয়ে ভালো জানেন- তাদের প্রয়োজন কোথায় এবং কেমন সেবা তাদের জন্য কার্যকর হবে। তরুণদের সক্ষমতাকে কাজে লাগানো হলে সমাজে প্রতিবন্ধীতা আর কোনো বাধা থাকবে না, বরং তা একেকটি সম্ভাবনায় রূপ নেবে। এ জন্য তরুণদের উচিত তাদের সমস্যা এবং তার নিরিখে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি প্রণয়নে যথাসম্ভব অংশগ্রহণ করা।’
মো. আবুল খায়ের জায়ীদ বলেন, ‘আমরা আমাদের চারপাশে তাকালেই প্রতিবন্ধীদের বঞ্চনার জায়গাগুলো দেখতে পাই। স্বাস্থ্যখাতে তাদের প্রতি বৈষম্যের জায়গাগুলো আরও তীব্র। এই বৈষম্যগুলো নিরসনে অপরাজেয় তারুণ্যের মত। অন্যদের এগিয়ে আসা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের হাতে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার সচেতনতার অংশ হিসেবে উপহার স্বরূপ স্যানিটারি প্যাড তুলে দেয়া হয়। আরএইচস্টেপ যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার সংরক্ষণ এবং উন্নয়নে কাজ করছে। সংগঠনের লক্ষ্য হলো বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে বিশেষত দরিদ্র, অসহায় ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়ন করা।
কেকে/এমএ