উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।
দলের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, নুরুল হক নুর দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে চাননি। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থা রেখেই চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিকল্প নেই।
তিনি আরও জানান, সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন নুর। সময় লাগতে পারে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ।
তিনি বলেন, নুরের উপর হামলার দায় সরকার এড়াতে পারে না। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
নুরের সঙ্গে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থোপেডিক ও স্পাইন সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ হোসেন রাসেল। সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নুরুল হক নুর চিকিৎসা নেবেন।
এর আগে, রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) গণঅধিকার পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৯ আগস্ট কেন্দ্রীয় কার্যায়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে থাকা পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার এজেন্টদের অতর্কিত হামলায় গুরুতর আহত হয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর দীর্ঘ ১৮ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও পরবর্তীতে বেসরকারি মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের অনিচ্ছা সত্ত্বেও চিকিৎসকের পরামর্শে তার পরিবার ও দলীয় সিদ্ধান্তে তাকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। তার দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।
গণঅধিকার পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, দেরিতে হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার জন্য আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই। তবে একই সঙ্গে বর্বরোচিত এ হামলার ২৪ দিন অতিক্রম হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সরকারের গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের সুপরিচিত একজন রাজনৈতিক নেতা ও দলীয় প্রধানের ওপর আক্রমণ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তথা দেশের গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত। তাই অনতিবিলম্বে এ বর্বরোচিত হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যথায় দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী জনতাকে সঙ্গে নিয়ে গণঅধিকার পরিষদ রাজপথে কঠোর কর্মসূচি দেবে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ আগস্ট রাতে রাজধানীর বিজয় নগরে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করলে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।
গুরুতর আহত অবস্থায় নুরকে প্রথমে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে রাত ১১টার দিকে তাকে স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে দীর্ঘ ১৮ দিন চিকিৎসা নিয়ে গত সপ্তাহে বাসায় যান নুর।
কেকে/ এমএস