শ্বশুর বাড়ি যাওয়া হলো না জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকালের বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদাউস মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ চত্বরে প্রথম জানাজার শেষে গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলা সদর শহরে রাতে কফিনের গাড়ি পৌঁছালে এলাকায় শোকে জনসাধারণ স্তব্ধ হয়ে যায়। পারিবারিক সদস্য ও প্রতিবেশীদের কান্নার রোল পড়ে যায়। প্রতিবেশীরা তাকে শেষ বারের মতো দেখার জন্য ভিড় জমাতে থাকেন। বাদ এশা জেলা কাচারি জামে মসজিদে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় তার বাবা পাবনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাকের পাবনা প্রতিনিধি রুমি খন্দকার, পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ইকবাল হোসেন বক্তব্য দেন। পরে পাবনা পৌরসভা সদর আরিফপুর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারিতে পারিবারিকভাবে বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছিল জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার। পরিবারের আশা ছিল একমাত্র মেয়েকে জাকজমকপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে শশুরবাড়িতে পাঠানো। কিন্তু তা আর হলো না। মাত্র ৩০ বছর বয়সেই পরপারে পাড়ি জমালেন তিনি।
যে বাড়িতে বিয়ের ধুমধাম অনুষ্ঠান করার কথা, সেই বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। রুমি খন্দকার ও পাবনা কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক লুৎফুন্নাহার পলির একমাত্র সন্তান জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা।
১৯৯৫ সালে জন্ম নেওয়া জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা ছোটকাল থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০০৯ সালে পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও পাবনা মহিলা কলেজ থেকে ২০১১ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ নিয়ে পাশ করার পর ভর্তি হোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেই অনার্স ও মাস্টার্স শেষে ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন।
রুমি খন্দকার বলেন, ‘নির্বাচনের দায়িত্ব শেষে রাত ১২টার দিকে শিক্ষক কোয়ার্টারে তার বাসায় গিয়েছিল। পরে সকালে যখন তাকে নির্বাচনের ভোট গণনার কক্ষে ডাকা হয়েছিল, তখন সেখানে যায়। কিন্তু কক্ষে ঢুকার আগেই দরজার সামনেই সে পড়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়। ভোটগ্রহণের পর আমার সঙ্গে ওর কথা হয়। ও নির্বাচন নিয়ে বেশ খুশি ছিল।’
কেকে/ এমএ