গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বরুন গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন খান পরিবারের উপর হামলা, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার দিয়ে হয়রানি করছে তাঁর শশুড় বাড়ির লোকজন। এ ব্যাপারে গাজীপুর আদালত ও কাপাসিয়া থানায় পরস্পর বিরোধী ৪ টি মামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন খান, স্ত্রী মাহমুদা খানম, সুমন্ধি জাহাঙ্গীর আলম, চাচা শশুড় মিলন খানকে আসামি করে ১ সেপ্টেম্বর সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) কাপাসিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন—জাহাঙ্গীর হোসেন খান (৩৭) (কোটবাজালিয়া গ্রামের কামাল উদ্দিন খানের ছেলে), মিলন খান (৫০) (একই গ্রামের মৃত হিম্মত খানের ছেলে) ও মাহমুদা খানম (৩৩) (একই গ্রামের মৃত কামাল উদ্দিন খানের মেয়ে)।
ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে গাছ কিনে টঙ্গীর বোর্ডবাজার এলাকার কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে আসছেন। গত ২৬ আগস্ট ব্যবসায়িক কাজে টঙ্গী গেলে এ সুযোগে তার স্ত্রী মাহমুদা খানম বাবার বাড়ি চলে যায়। পরে রাতে স্ত্রীকে ফেরত আনতে গেলে পারিবারিক কলহের জেরে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
অভিযোগে বলা হয়, ওই সময় স্ত্রী মাহমুদা খানমের প্ররোচনায় জাহাঙ্গীর খান লোহার রড দিয়ে আলমগীরের মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে মিলন খান কাঠের লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে মারাত্মক জখম করেন। একই সঙ্গে আলমগীরের পকেটে থাকা ব্যবসায়িক নগদ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও করেছেন তিনি। আলমগীরের ডাক-চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এলে অভিযুক্তরা হুমকি দিয়ে যায় যে, ভবিষ্যতে আবার স্ত্রীকে আনতে এলে তাকে খুন করে গুম করে ফেলা হবে।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত আলমগীরকে প্রথমে বরুন বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরদিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
কাপাসিয়া থানার এসআই সোহাগ হোসেন জানান, পারিবারিক কলহের জেরে কাপাসিয়া থানায় ২ টি মামলা রুজু হয়েছে।
এদিকে আসামি মাহমুদা খানমের মা গোলাপি দাবি করেন, “এটা পারিবারিক বিরোধ ছাড়া আর কিছু নয়। এখানে কোনো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি।”
মামলার বাদী আলমগীর হোসেন খান বলেন আমার স্ত্রী মাহমুদা খানম ও শিশু সন্তান রাফিকে আটক করে রাখা হয়েছে। আমি নগদ টাকা ও আমার স্ত্রী এবং আমার সন্তানকে উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করি।
প্রতিবেশী জাকারিয়া, হারিসুল ও হেলিম খান বলেন, সামান্য ঘটনায় যৌতুক মামলা ৭৮৮/২৫, সাতধারা মামলা ১১৯৬/২৫ সহ মোট ৪ মামলা হয়েছে। আমরা প্রকৃত ঘটনা জন্য প্রয়োজনে আদালত ও থানায় গিয়ে স্বাক্ষী দিতে প্রস্তুত আছি।
অপর দিকে আলমগীর হোসেন বড় ভাই আলী হোসেন বলেন, আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার। আমাদের পরিবারের ধ্বংস করার জন্য একের পর এক মামলা করছে জাহাঙ্গীর আলম খান। আমার ভাইয়কে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে উল্টো আমার ভাই ও আমার নামে কাপাসিয়া থানায় মামলা করেছে। কোটবাজালিয়া গ্রামের কামাল উদ্দিন খান গংরা ৭০ শতাংশ সরকারি খাস জমি (আর এস দাগ নং৭২৪ ও এস এ দাগ নং১২২৪) জমি দখল করে প্রকৃত ভূমিহীনদের বঞ্চিত করছে। আমরা খাস জমি উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলম খানের বক্তব্য নেওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কেকে/এআর