সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
দেশজুড়ে
টিকে থাকার লড়াইয়ে চরাঞ্চলের চার লাখ পরিবার
রংপুর অফিস
প্রকাশ: রোববার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৫:০৩ পিএম আপডেট: ০৭.০৯.২০২৫ ৫:১১ পিএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

তিস্তার ঢেউ আর ভাঙনের শব্দে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে উত্তরের চরাঞ্চলের মানচিত্র। নদীর বুক চিরে জেগে ওঠা এসব জনপদে বসবাসকারী হাজারো পরিবার বছরজুড়ে লড়ছেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। বিশেষ পরিকল্পনা ছাড়া এই মানুষগুলো কখনোই মূল উন্নয়নধারায় সম্পৃক্ত হবেন না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

তিস্তার গোকুন্ডা ঘাট থেকে নৌকায় পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় লালমনিরহাটের ঢুসমারা চরে। চারদিক নদীঘেরা এই চরগ্রামে রয়েছে প্রায় এক হাজার পরিবারের বসবাস। এখানকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও নদীপথনির্ভর। নেই কোনো সেতু বা পাকা সড়ক।

চরে পা রেখেই চোখে পড়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের করুণ চিত্র। তিস্তার ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, স্মৃতির ঠাঁই। নদী গর্ভে চলে যাওয়া নিজের ভিটে থেকে ঘর সরাচ্ছিলেন হাসেন আলী। কণ্ঠে তার শুধুই আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা। তিনি বলেন, ‘বছরে কয়েক দফা ভাঙনের কবলে পড়তে হচ্ছে। শুধু বসত ভিটাই নয়, তিস্তা গিলে খাচ্ছে আবাদি জমি। গেল একমাসে ঢুসমারার চরে দেড়শ পরিবারের বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।’

ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ


ঢুসমারার মতো পুরো রংপুর বিভাগেই রয়েছে ৬০০-এর বেশি চর। এ সব চরেই বসবাস করে প্রায় চার লাখ পরিবার। কিন্তু এ জনপদের মানুষের জীবনের মৌলিক অধিকারগুলো এখনো অধরাই থেকে গেছে। অধিকাংশ চরবাসীর জীবন এখনো স্যানিটেশনবিহীন, শিক্ষার সুযোগ অপ্রতুল, আর স্বাস্থ্যসেবার নামমাত্র ব্যবস্থা। চর থেকে মূল ভূখণ্ডে আসতে সময় লাগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। জরুরি স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াটা এক কথায় ‘অসম্ভব’।

আমিরুল নামে চরের এক বাসিন্দা জানান, ‘ছোট একটা অসুখ হলেই বিপদ, সময়মতো চিকিৎসা পাই না। চরে কোনো ক্লিনিক বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র নাই। ছোট-বড় যে কোনো অসুখে নৌকায় নদী পাড়ি দিয়ে কাউনিয়া উপজেলা অথবা রংপুর ও কুড়িগ্রামে যেতে হয়। অনেকসময় গুরুতর রোগী হলে নৌকায় মারা যান।’

রহমান নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘ঢুসমারার চরে বাচ্চাদের জন্য একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল। কিন্তু সেটি ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে একটি এনজিও স্কুল থাকলেও সেটিও ভাঙ্গনের পথে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে বাচ্চাদের পড়ালেখার আর কোনো সুযোগ থাকবে না।’

চরাঞ্চলের মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষি। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও নদীভাঙন নিয়মিত ফসলহানি ঘটাচ্ছে। ফলে অনিরাপদ আয় এবং চরম দারিদ্র্যের চক্র থেকে বের হতে পারছে না এসব পরিবার।

সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, দেশে দারিদ্র্যের হার কমলেও চরাঞ্চলে ২৪.৩ শতাংশ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে এবং ১২.৯ শতাংশ মানুষ চরম দরিদ্রতায় দিন পার করছেন।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাম্মী ইসলাম বলেন, ‘চরবাসী দেশের উন্নয়ন সূচকের বাইরে রয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জীবিকাভিত্তিক টেকসই পরিকল্পনা ছাড়া তাদের মূলধারায় আনা সম্ভব নয়।’

অন্যদিকে, চরবাসীর জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন পল্লী উন্নয়ন একাডেমির যুগ্ম পরিচালক ড. আব্দুল মজিদ। তিনি জানান, ‘আমরা চর উন্নয়ন নিয়ে কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। তবে এর পরিধি আরও বাড়াতে হবে।’

কেকে/এজে
আরও সংবাদ   বিষয়:  চরাঞ্চল   টিকে থাকার লড়াই  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি
জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
পাল্লা বাজারে রক্তলাল শাপলার মনভোলানো সমাহার
কালাইয়ে বিএনপির গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close