সাভারে কর্মরত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের প্রতিনিধি এবং সাভার প্রেস ক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদাকে মারধর, চাঁদাদাবি ও অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে সন্ত্রাসী সাব্বির আহমেদ ওরফে সাইকো সাব্বিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) ভোরে মানিকগঞ্জ জেলার পূর্ব দাশড়া এলাকা থেকে সাব্বিরকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে মারধর, চাঁদাদাবি ও অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাজমুল হুদা বাদী হয়ে সাইকো সাব্বিরসহ ১১ জনকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে আসামিদের মধ্যে আছেন—সন্ত্রাসী সাব্বির আহমেদ ওরফে সাইকো সাব্বির (২৬), জাহিন সিংহ (২৮), রেদোয়ান হাসান (২৫)। এছাড়াও ৬-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে সাইকো সাব্বিরের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল।
সাংবাদিক নাজমুল হুদা বর্তমানে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলাতে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট সন্ত্রাসী সাব্বির আহমেদ ফোন করে সাভার প্রেস ক্লাব সভাপতি নাজমুল হুদার কাছে ১১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহপরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু, তার ব্যক্তিগত সহকারী জাহিদ এবং নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর হুমকি দেন। পরবর্তীতে ফেসবুকে তাদের ছবি ব্যবহার করে দালাল আখ্যা দিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়।
অপপ্রচার বন্ধ করতে বললে সাব্বির ও তার সহযোগীরা নাজমুল হুদাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আওয়ামী লীগ ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা করে এবং সাভার প্রেস ক্লাব দখলের হুমকিও দেয়।
ঘটনার পরদিন (২০ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নাজমুল হুদা সংবাদ সংগ্রহে যাওয়ার পথে সাভার মডেল মসজিদের সামনে তার প্রাইভেটকার থামিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। এ সময় সাব্বির ও তার দলবল জোরপূর্বক তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পুনরায় ১১ লাখ টাকা দাবি করে। তিনি অস্বীকার করলে তাকে মারধর করে এবং সঙ্গে থাকা ৩২ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে তাকে অপহরণের চেষ্টা চালানো হয়। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং সাংবাদিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দ্রুত শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল জানান, ‘এ পর্যন্ত একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
চাঁদাদাবি ও অপহরণ চেষ্টার ঘটনায় সাংবাদিক নাজমুল হুদা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় চারজনকে এজাহারনামীয় আসামি এবং অজ্ঞাতনামা আরো৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কেকে/এএস