চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছে ছাত্র-জনতা। এতে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ চট্টগ্রাম শহর ও খাগড়াছড়িগামী বিভিন্ন বাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়িতে থাকা কয়েক হাজার যাত্রী ভোগান্তির শিকার হন।
সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত টানা দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে তারা।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দূরবর্তী স্থানে চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয়। এতে সময় ও অর্থ ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে।
অবরোধকারীরা জানান, ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট, পর্যাপ্ত ওষুধের অভাব ও আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে তারা ১২ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে—চিকিৎসক নিয়োগ বৃদ্ধি, সার্বক্ষণিক জরুরি বিভাগ চালু, পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ, ল্যাব সুবিধার উন্নয়ন এবং নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন।
আন্দোলনকারী আকিব হাসান মাহি বলেন, ‘আমরা গত এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও স্বাস্থ্য বিভাগ কোনো সাড়া দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে মহাসড়ক অবরোধে নামতে হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি না হলে আমরা ফটিকছড়ির সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আরো বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।’
অবরোধের খবর পেয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী, ফটিকছড়ি থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে অবরোধকারীরা স্বেচ্ছায় সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় যাত্রীরা জানান, হঠাৎ সড়ক অবরোধে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বিশেষ করে রোগীবাহী গাড়িগুলো দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে তারা আন্দোলনকারীদের দাবি যথাযথ বলে মনে করেন এবং দ্রুত সমাধানের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন ‘তাদের দাবী যৌক্তিক। তবে জনসাধারণকে ভোগান্তি দিয়ে আন্দোলন করলে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। আমি তাদের আহ্বান জানিয়েছি তারা সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছে।’
কেকে/ এমএস