সম্প্রতি টিভি নাটকের বর্ষিয়ান অভিনেত্রী শিখা খান মৌ একটি ফেসবুক পোস্ট দারুণ আলোচনায় এসেছে। যাতে তিনি তার পেশাগত নানা জটিলতার কথা তুলে ধরেন। ২৫ বছর ধরে অভিনয় করে আসা এই অভিনেত্রীর সদ্য কাজ কমে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে, তাই সহশিল্পী-নির্মাতাদের কাছে কাজ চেয়েছেন তিনি।
অবস্থার উন্নয়নের জন্য পোস্টটি করলেও এখন তা নিয়ে যে তিনি নতুন বিপাকে পড়েছেন সে কথা এই অভিনেত্রীর আজকের একটি স্ট্যাটাস দেখে অনুমান করা যায়।
তিনি লিখেছেন, দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বলছি—আমি কিছুদিন আগে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম আগের তুলনায় আমাদের কাজ কম হচ্ছে এই আফসোস নিয়ে। অথচ কিছু কিছু ইউটিউবার, ব্লগার আমার এই পোস্টটাকে নিজেদের মতো করে বিভিন্ন নাটক থেকে দুঃখী দুঃখী চেহারার ছবি নিয়ে নানানভাবে ভিডিও করে ছেড়ে দিচ্ছে! আমি কখনোই বলি নাই আমি বাসা ভাড়া দিতে পারছি না, সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে, তাহলে এইসবের মানে কি? এখানে বলা হয়েছে যে আমরা যারা রেগুলার কাজ করতাম তারা কাজ ছাড়া সময় কাটাতে কষ্ট হচ্ছে। তাই যেন একটু খেয়াল করা হয় যাতে আমরা আগের মত কাজ করতে পারি। এইসব না বলে আমাদের স্ট্যাটাসকে নানাভাবে নিজেদের মতো করে তারা ব্যবসা করছে। এরকমভাবে ভিডিও বানিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে যা খুবই বিরক্তিকর ও কষ্টদায়ক। তাই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি—এইসব ফাইজলামির একটা সীমা আছে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে মৌ শিখা লেখেনে, আমি মৌ শিখা। অনেক বছর থেকে অভিনয় করে আসছি। এতদিন নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবেই জানতাম, কিন্তু গত আড়াই মাস ধরে নিজেকে অভিনেত্রী ভাবতে লজ্জা হচ্ছে। আগে যেখানে মাসে ১৫ থেকে ২০ দিন কাজ করতাম সেখানে আড়াই মাস যাবত মাসে চার থেকে পাঁচ দিন কাজ করছি। তাহলে কীভাবে মনে হবে আমি অভিনয় শিল্পী? অভিনয় করেই আমার সংসার চলে।
শিখা আরো লিখেছেন, তবে আমি জানি, বেঁচে থাকতে আমার মূল্যায়ন করা না হলেও আমার মৃত্যুর পর কিছু মানুষ হলেও আমাকে মনে রাখবে। হয়তো বলবে—আহারে মহিলাটা কত ভালো ছিল, কত সহজ সরল ছিল, কারো সাত-পাচে ছিল না, কারো সামনে পেছনে ছিল না, আহারে মহিলাটার আত্মার শান্তি পাক। কিন্তু তাতে কি লাভ হবে আমার? বেঁচে থাকতে তো দরকার আমার কাজের। বেঁচে থাকতেই দেখে যেতে চাই আমার মূল্যায়ন হচ্ছে। কিন্তু সেটা কি আদৌ দেখে যেতে পারব? আমি জানি না।
একবুক অভিমান নিয়ে শিখা লিখেছেন, আমার অনুরোধ আমি মরে গেলে দয়া করে কেউ আফসোস করবেন না। আমাকে মনে করারও কোন দরকার নেই। হঠাৎ করে কেন কাজ কমে গেল, ডিরেক্টররা ডাকছেন না কেন, মনে করছেন না কেন তাদের গল্পের চরিত্রের সাথে আমি নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারব? আমি তো আমার রেমুনারেশন বাড়াইনি। ২৫ বছর যাবত মিডিয়ায় আছি, এখনো গেন একই রেমুনারেশন নিয়ে কাজ করছি। যাইহোক যে কটা দিন বাঁচি, কাজ করে যেতে চাই। আপনারা ব্যাপারটা দেখবেন, আমার সহকর্মী যারা আছেন তারা আমার ব্যাপারটা দেখে একটু সাহায্য করবেন। একটা শিল্পীর জন্য হঠাৎ করে কাজ কমে যাওয়া কম কিছু না আপনারা পাশে থেকে আমাকে সাহায্য করবেন আল্লাহ সহায় আছে।
কেকে/এএম