বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, শহিদের রক্তের দাগ না শুকাতেই ভাগ বিভাজনের হিংসাশ্রয়ী রাজনীতি প্রবল হয়ে উঠেছে। গত এক বছরে দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ছাত্র শ্রমিক জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তীতে শহিদ আবু সাঈদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির দুই শহীদসহ সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেছেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বীর শহিদদের রক্তের দাগ না শুকাতেই ক্রমেই ভাগ বিভাজনের হিংসাশ্রয়ী রাজনীতি আবার প্রবল হয়ে উঠছে। অভ্যুত্থানের শহিদেরা বৈষম্যহীন মানবিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য আত্মাহুতি দিয়েছিলেন গত এক বছরে দেশ তার বিপরীত দিকে হেটেছে। গত এক বছরে বৈষম্য আরও বেড়েছে, পয়ত্রিশ লক্ষ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্য সীমার নীচে নেমে এসেছে, বেড়েছে বেকারত্ব। একবছর পার হলেও এখনও শহিদ ও আহতদের পূর্ণাংগ তালিকা হয়নি, শহীদ ও আহত পরিবারসমূহের উপযুক্ত পুনর্বাসন হয়নি।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে শ্রমজীবী মেহনতিরা সবচেয়ে বেশি জীবন দিলেও সরকারে তাদের কোন প্রতিনিধি রাখা হয়নি, বরং অনেক ক্ষেত্রে তাদের সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে।
স্মরণ অনুষ্ঠানে পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী বলেন, গত বছরের জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ছিল এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় গণজাগরণ-গণ প্রতিরোধ। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি জনগণের এই অভ্যুত্থানকে দাঙ্গা হিসাবে আখ্যায়িত করে তার গৌরবকে হেয় করতে চায়।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই শহিদ স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর রেজাউল আলম, কেন্দ্রীয় সংগঠক আবুল কালাম আজাদ, বাবর চৌধুরী, জামাল সিকদার, আহত জুলাই যোদ্ধা ফায়েজুত রহমান মুনির প্রমুখ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহ্বায়ক শেখ আবদুর নূর। উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুর রেজা মামুন, স্নিগ্ধা সুলতানা ইভা, মহানগর কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন, জোনায়েদ হোসেন, চুন্নু সিকদার প্রমুখ।
শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠানের পর বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে শহীদ আবু সাঈদ, শহিদ বদিউজ্জামাল ও আবদুল লতিফসহ গণঅভ্যুত্থানের সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটি, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি, বিপ্লবী যুব সংহতি, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদ ও বিপ্লবী পাদুকা শ্রমিক সংহতির পক্ষ থেকে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এরপর পার্টির সাধারণ সম্পাদক জননেতা সাইফুল হক এর নেতৃত্বে পার্টির নেতা কর্মীরা সম্মিলিতভাবে মুষ্টিবদ্ধ হাতে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এরপর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে পার্টির উদ্যোগে শহিদ স্মরণ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা ও উপজেলা স্তরেও শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কেকে/এজে