জামালপুর সদর সেটেল্টমেন্ট অফিসের সার্ভেয়ার ফারুক হোসেনের ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট এবং জামালপুরে একটি ফ্ল্যাট থাকলেও তিনি জানান, তার কিছুই নেই। বউ বাচ্চা নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন, চাকরির টাকায় সংসার চলে। তার কিছুই নেই, তিনি তবুও নিঃস্ব।
তবে সহকর্মী এবং তার প্রতিবেশীরাও জানেন ফারুকের ঢাকায় এবং জামালপুরে ফ্ল্যাট রয়েছে।
জামালপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র শহিদ হারুন সড়কে সাত তলা বাড়ি ধানসিঁড়ির চতুর্থ তলার উত্তর পশ্চিমের ফ্ল্যাটে থাকেন ফারুক হোসেন।
সরেজমিনে খুঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় সাত আট বছর আগে ফারুক ওই ফ্ল্যাট কেনেন পয়তাল্লিশ লাখ টাকায়। ওই ফ্ল্যাটে ফারুক ভাড়ায় থাকেন কিনা জিজ্ঞেস করা হলে বাড়ির দারোয়ান বলেন, ভাড়ায় থাকবেন কেন? তার নিজের ফ্ল্যাট।
অপরদিকে ফারুকের গ্রামের বাড়ি হাজরাবাড়ী পৌরসভার ব্রাহ্মনপাড়া গারোবাড়ির পাশে কথা হয় তার এক স্বজনের সাথে। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ফারুকের এক স্বজন খোলা কাগজকে জানান, ফারুক চাকরি করে জামালপুরে এবং ঢাকায় বাসা তৈরি করেছে। ঢাকার বাসা কোথায় তা না জানলেও তিনি বলেন, জামালপুরের বাসা চামড়াগুদামে ৭তলা বিল্ডিংয়ে।
ফারুকের সঙ্গে তার নিজের পরিবারের সম্পর্ক এই মুহূর্তে খুব ভালো নেই তবে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে তার যোগাযোগ ভালো।
ফারুকের ওই স্বজনের দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নামে বেনামে আরো অর্থসম্পদ থাকতে পারে। তার বাবা ওমর আলীর চার বিঘার মতো জমি রয়েছে, ফারুকের ছোট ভাই ফরিদ তেমন কিছু করে না বলে জানা গেছে। ফারুক তার বাবাকে ধানের ব্যবসার জন্য পুঁজি দিয়েছিল কিন্তু বর্তমানে ব্যবসা বন্ধ।
ফারুকের ওই স্বজন জানান, নামে বেনামে ফারুক কয়েক কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছে সার্ভেয়ার পদে চাকরি করে।
জানা গেছে, ফারুক হোসেন সার্ভেয়ার পদে ২০০৬ সালে চাকরিতে যোগ দেন। প্রথমে কুমিল্লায় পরে টাঙ্গাইল, জামালপুর, বগুড়ায় চাকরি করে বর্তমানে কয়েকবছর ধরে জামালপুরে আছেন।
জানা গেছে, ১২ তম গ্রেডের চাকরিতে বর্তমানে তার মূল বেতন ২৩৫৭২ টাকা। ঢাকা এবং জামালপুরে দুটি ফ্ল্যাট এবং আরো নামে বেনামে সম্পদের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ফারুক হোসেন জানান, আমার কোন বাড়ি নেই, কোন অবৈধ সম্পদ নেই। পরিবার নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি। ২০০৬ সালে সার্ভেয়ার পদে কুমিল্লায় যোগদান করেন। এখন তার কিছুই নেই, তবুও তিনি নিঃস্ব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, জামালপুর সদর সেটেল্টমেন্ট অফিসের সহকারী সেটেল্টমেন্ট অফিসার ( চলতি দায়িত্ব) মো. আব্দুস ছালাম বলেন, আমি গত নভেম্বরে এখানে দায়িত্ব নিয়েছি। এ বিষয়ে এর আগে কেউ বলেনি, আমি কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, জামালপুর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং দুদকের উচিত তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তা নাহলে দুর্নীতি থামবে না, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীরা একইরকম থেকে যাবে।
কেকে/এআর