রাউজানে বন্ধুর বউকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে না করে এক মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মো. মোজাহিদ ইমন ওরফে ইমাম (২৬) নামে কথিত এক সমন্বয়কের বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৮ জুন) রাতে রাউজান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আসাদ চৌধুরী বাড়িস্থ ইমামের নানার বাড়ির একটি বাসা থেকে বন্ধুর স্ত্রীসহ স্থানীয়রা হাতেনাতে ধরে রাউজান থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন।
ইমাম রাউজান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আসাদ চৌধুরী বাড়ির বসবাসকারী গার্মেন্টসকর্মী হারুন অর রশিদ ও কোহিনুর বেগমের পুত্র। ইমন তার নানার বাড়িতে বেড়ে উঠলেও তার জন্মস্থান সম্পর্কে কেউ সঠিক তথ্য জানাতে পারেনি।
জানা যায়, ইমনের বাসার অদূরে ছিল তার বন্ধু ছাত্রদলকর্মী ইমদাদুল হক এনামের ঘর। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব, এনামের বাসায় যাতায়াত ছিল ইমনের। এর মধ্যে ইমনের সঙ্গে এনামের স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঘনিষ্ঠ হতে থাকে দুইজন। গত মে মাসের ২৫ এপ্রিল কাউকে কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে যান এনামের স্ত্রী। ফিরে আসে ২৮ মে। এরপর গত ৩১ মে আবারো উধাও হয়ে যায় এনামের স্ত্রী। এরপর থেকে নিখোঁজ। সমন্বয়ক ইমন তার বন্ধু এনামকে সান্ত্বনা দেয়, থানায় মামলা করার সময় ইমনও গিয়েছিল। সর্বশেষ শনিবার রাতে ইমনের বাসা থেকে এনামের স্ত্রীসহ ইমনকে ধরে থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে জনতা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, শত শত মানুষের উপস্থিতিতে ইমন ও তার বন্ধুর বউকে এনে পুলিশের গাড়িতে তোলা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ইমনের জন্মপরিচয় নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। নানার বাড়িতে বেড়ে উঠা ইমন তার বাবার নাম গার্মেন্টসকর্মী হারুন অর রশিদ দাবি করলেও তার সঠিক তথ্য কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। গৃহস্থের বাড়িতে কাজ করতেন মা কৌহিনুর বেগম। ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করলেও অভাবের কারণে আর পড়াশোনা করা সম্ভব হয়নি ইমনের। সে দোকান কর্মচারীর কাজ নেয়। এর মধ্যে ৫ আগস্ট পরবর্তী নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে ডালপালা মেলতে থাকে ইমনের।
ছাত্রজনতা আন্দোলনের ছবি সুপার এডিট করে রাউজানের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি, মানুষকে হয়রানি, মাটি কাটার টাকা ভাগাভাগি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া, আবার মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান চালু করাসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান ইমন। গত ৪-৫ মাস আগে কাঁধে বিদেশি রাইফেল নিয়ে ছবিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ইমনের বন্ধু ছাত্রদলকর্মী ইমদাদুল হক এনাম বলেন, আমার স্ত্রী প্রথম ২৫ তারিখ ঘর থেকে চলে যায়, পরে ২৮ তারিখ ফিরে আসে। আমি আজ জানতে পারলাম আমার স্ত্রীকে নিয়ে ইমন কক্সবাজার গিয়েছিল। এরপর গত ৩১ মে আবারো পালিয়ে যায় আমার স্ত্রী। ইমন আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছিল, থানায় গিয়েছিল। ইমন যে আমার সর্বনাশ করেছে তা জানতাম না। ইমন আমার স্ত্রীকে একমাস ধরে ধর্ষণ করেছে। আমার কাছে তার প্রমাণ আছে। এখন থানা পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ইমন নামে এক কথিত সমন্বয়ককে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন জনতা। ওই মহিলার স্বামী বাদী হয়ে মামলা করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে যদি মামলা না করে তাহলে যে আইনের ধারা আছে সে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, অস্ত্রকাধে নেওয়া ছবির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে দাবি করে একটি রিসোর্টে গিয়ে ছবিটি তুলেছিল। সে বখাটে টাইপের ছেলে, বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত এটা জনগণের কথা।
কেকে/ এমএস