রাজউকের নকশা অনুমোদন সংক্রান্ত ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম (ইসিপিএস) সার্ভারে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে জাল-জালিয়াতি করে নকশা অনুমোদন করার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজউকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ ও প্রটোকল) মো. আব্দুল্লাহ আল মারুফের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
রাজউক জানায়, গত ১৯ মে ইসিপিএস সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে মাত্র ১৭ মিনিটে একটি ভবনের অনুমোদন পাশের ঘটনাটি নজরে আসে রাজউক কর্তৃপক্ষের। জলাভূমি ও হাইট রেস্ট্রিকশন থাকা ভূমিতে ১৫ তলা বিশিষ্ট ১৮৫ ইউনিটের এই সুউচ্চ ভবনটির নকশা সকল বিধিকে পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পাশ করিয়ে নেয় অনুপ্রবেশকারীরা।
পরবর্তীতে রাজউক কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা জানতে পারার পর প্রাথমিক তদন্তে একই উপায়ে আরো তিনটি ভবনের নকশা অনুমোদন শেষ পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় পায়। তৎক্ষনাৎ সার্ভারটি বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজউকের পক্ষ থেকে এবং মতিঝিল থানায় সেদিনই একটি জিডি দায়ের করা হয়।
এ পাশকৃত নকশার সূত্র ধরে রাবেয়া বারী নামক এক প্রকৌশলীর সন্ধান পায় রাজউক, যার স্বাক্ষর নকশাগুলোতে পাওয়া যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মতিঝিলের নীল নকশা নামক একটি কম্পিউটারের দোকানের এবং সেখানকার এক কর্মচারী স্বপনের নাম। তারই প্রেক্ষিতে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে গত ২২ মে একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় মতিঝিলের নীল নকশা নামক দোকানটিতে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে দোকানটির সাথে অননুমোদিত নকশা অনুমোদনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। একইসাথে দোকানটির মালিক এনামুলের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে রাজউকের নির্ধারিত ফি পরিশোধের প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়াও দোকানের কয়েকটি কম্পিউটারে এ অবৈধ ভবনগুলোর নকশা পাওয়া যায়। যা থেকে দোকানের মালিক এনামুল ও কর্মচারী স্বপনের সম্পৃক্ততা প্রতীয়মাণ হয়। মোবাইল কোর্ট চলাকালীন তাদের কাওকেই পাওয়া না যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মচারীদের পুলিশের আওতায় নেওয়া হয়।
এমন সংবেদনশীল বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করেন এবং তার নির্দেশনায় এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ৬ জুন রাজউক বাদী হয়ে 'সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর দন্ডবিধি অনুযায়ী উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা দায়ের করা হয়, যার মামলা নম্বর উত্তরা পূর্ব- ০৪(০৬)২৫। এ মামলার এজাহারনামীয় ২১নং আসামি জালিয়াতির সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান ‘নীলাভ নকশাঘর’ এর মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ এজাহারনামীয় ২২ ও ২৩নং আসামি সজীব ও মুকুল উভয়কেই পুলিশ মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
কেকে/এজে