দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার টংগুয়া (কছিরপাড়া) গ্রামে ঈদুল আজহার পরদিন বিকালে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকন্যা ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভিকটিম বর্তমানে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনায় শিশুটির মা লাভলি বানু থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঈদের পরদিন বিকেলে ভিকটিম সাবেকুন নাহার (৯) ও তার চাচাতো বোন জান্নাতি (৮) প্রতিবেশী নূরন্নবী ইসলামের বাড়িতে পানি খেতে যায়। জান্নাতি ফিরে এলেও সাবেকুন ফিরে না আসায় খোঁজ শুরু করেন তার মা লাভলি বানু। পরে জান্নাতির কাছ থেকে জানা যায়, সাবেকুন নূরন্নবীর ঘরের ভেতরে ঢুকে আর বের হয়নি।
ভিকটিমের মা ছুটে গিয়ে দেখেন, মেয়েটি নূরন্নবীর বাড়ির আঙিনায় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে এলে শিশুটি তার মাকে জানায়, প্রতিবেশী নূরন্নবী ইসলাম (২১) তার মুখ চেপে ধরে ঘরের ভিতরে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে নূরন্নবীর বাবা শফিকুল ইসলাম (৫৫), মা লাকী বেগম (৪০) ও ভাই জুয়েল ইসলাম (২৫) শিশুটিকে টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে বাড়ির বাইরে ফেলে রাখে।
ঘটনার বিবরণ জানার পর শিশুটির মা লাভলি বানু খানসামা থানায় চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন—নূরন্নবী ইসলাম, তার ভাই জুয়েল ইসলাম, বাবা শফিকুল ইসলাম ও মা লাকী বেগম। চারজনই একই গ্রামের বাসিন্দা।
শিশুটির মা লাভলি বানু বলেন, “আমার মেয়ে এখনো হাসপাতালে। সে ঠিকমতো বসতেও পারছে না। আমি এর কঠোর বিচার চাই। আমি চাই, আর কোনো শিশু এমন নিষ্ঠুরতার শিকার না হোক।”
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকাবাসীরা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। অনেকে অভিযোগ করেছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এসব ভয়ঙ্কর অপরাধের পেছনে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মুখে একটাই প্রশ্ন আর কত শিশু নির্যাতনের শিকার হলে সমাজ জেগে উঠবে।
এ বিষয়ে খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নজমুল হক বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং ঘটনাটি তদন্তাধীন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এআর