লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় বিক্রির উদ্দেশ্যে ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় সাড়ে ১২ মণ (১২ মণ ৫০ কেজি) সরকারি মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় আলী হোসেন নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে আটক করা হলেও পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২০ মে) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের জিরোপয়েন্ট (পোনাহাটি) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভাঙারি ব্যবসায়ী আলী হোসেন উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের জামিরবাড়ি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলী হোসেন বইগুলো ক্রয় করে ভ্যানযোগে কাকিনা জিরোপয়েন্টে পৌঁছালে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখে তাকে আটক করে। পরে তারা কালীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বইবোঝাই ভ্যানগাড়িটি জব্দ করে এবং আলী হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলী হোসেন জানান, তিনি এই বইগুলো বিপ্লব নামের আরেকজন ভাঙারি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিনেছেন। বিপ্লব এই বইগুলো আব্দুর রহমান নামে আরেকজন ভাঙারি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে। তবে আব্দুর রহমান এই বিপুল পরিমাণ বাতিলকৃত সরকারি বই কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন। উদ্ধারকৃত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির সাধারণ বই এবং নবম শ্রেণির দাখিল স্তরের বই। এই বইগুলো মূলত ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের সিলেবাস পরিবর্তনের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বাতিল করা হয়েছিল।
এদিকে, সরকারি বই এভাবে বাইরে চলে যাওয়ার ঘটনায় এবং প্রাথমিক তদন্তে গাফিলতির সন্দেহে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের হিসাব সহকারী তাহাজ্জুদ হোসেন এবং অফিস সহায়ক (পিয়ন) তারিককে শোকজ নোটিশ পাঠানো হবে বলে শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বদরুল হাসান মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘সরকারি বই এভাবে বিক্রির তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। আটককৃত ব্যবসায়ীকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, পরবর্তী যাচাই-বাছাই শেষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কেকে/ এমএস