সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫,
৪ কার্তিক ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: জবি ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, দুইজন শনাক্ত      জুলাইয়ের চেতনার কথা বলে ওরা দেশটাকে সংকটের মুখে ফেলেছে : নুর      হাসানাত আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা      বিধি অনুযায়ী এনসিপি শাপলা প্রতীক পাচ্ছে না : ইসি      রাজধানীতে নারী গণমাধ্যমকর্মীর মরদেহ উদ্ধার, যৌন হয়রানির অভিযোগ      পিআর আন্দোলন জামায়াতের একটি রাজনৈতিক প্রতারণা : নাহিদ      পোশাক তৈরির কাঁচামাল ও গুরুত্বপূর্ণ স্যাম্পল ধ্বংস হয়েছে : বিজিএমইএ      
সাহিত্য
আফরিমা ঈমার কবিতা
সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৫, ১:০৬ এএম
আফরিমা ঈমা | ছবি : খোলা কাগজ

আফরিমা ঈমা | ছবি : খোলা কাগজ

নব আগন্তুক

নব যৌবনা পুষ্প মঞ্জুরি কিশলয় ধরিল,
কোনো এক প্রভাতে, চক্ষু ঘন পল্লবী নুয়ে পড়িল,
সুগন্ধি ছাড়িল, আরেক নিশিতে।

পুষ্প সুবায় ব্যাকুল হইয়া ভ্রমর জাগিল যবে,
মোহিত কোনো ব্যাকুল ত্রাস পবন বাহিয়া,
স্তব্ধ করিল সবে।

এ কোন কুটুম আসিতে চায় দুয়ারে?
কোন হে রাজ্যের ভ্রমর?
স্নিগ্ধ কন্ঠে ডাকিতে চায় যে, ধরিতে চায় মনি কোঠর।

নব প্রভানে এ গগনে উতলা হাওয়ায়,
এ পরাণ হয় বেমানান,
ছুঁইতে চায় ঐ হাত আগন্তুকময়, দেয় না তবু সায় এই মন।

নবাগত দাঁড়াইয়া, অপলক চাহিয়া,
এক কাতর কন্ঠ সুরে জানাইতে চায় পারে যত প্রাণ ঢালিয়া,
সুবাসিরে চায় রাখিবে আমফোরে।

সুবাসিত পুষ্প কিশলয় নাড়িয়া,
চক্ষু লজ্জায় পাঁপড়ি নাহি মলিতে পারে পেছন ঘুরিয়া বুঝিয়া দেয়,
আমি পুষ্প তুমি ভ্রমরিয়া, আমি ভিন্ন ধারে।

নব কল্লোলে মম না ভাসাইবো গা,
কোনো পল্লবেই আঘাত হানিব না
এ বিষাদ কাননে না বাঁড়াও পা, দুয়ারে তব মুখ তুলিও না।

আসিলে এ হেমন্তে, হেমন্তেই বিচ্ছেদ লও,
মম শাখেঁতেই থাকি শান্ত
তোমা জগতে সন্ধানিয়া লও, তব হৈমন্তীরে, তুমি যে হেমকান্ত।

এ বিশাল কানন নাইকো নিঃসঙ্গ,
কারো ভুবনেও নাই ফাঁকা এইটুক গুঞ্জনিয়া ছিল ক্ষনিকের সঙ্গ,
পুষ্পিত আয়ুতে পুষ্পময় ভ্রমরেই মম নব আগুন্তক।

**

জনম যুদ্ধ


কী হবে করে ক্রন্দন?
যদি ছিঁড়ে মানববন্ধন।

মানব জনম একটাই,
পৃথিবী তো যুদ্ধের ঠাঁই।

পরের জনম আরেক ফলক্ষেত্র,
তাই ফলাও ফসল যত্রতত্র।

ব্যর্থ স্মৃতি নিয়ে পড়ে থেকো না,
আর অতীত কখনো ভুলো না।

যাও ব্যর্থ অতীত সম্মুখে
হয়ে বর্তমান, কুড়াঁও ভবিষ্যতকে।

যাও রণে, রণতরী সব বেয়ে
পড়ুক বজ্র, আসুক ঝড় ধেয়ে।

যাও রণতীরে, ধরো তলোয়ার শক্তে,
রণাঙ্গনে ভাসুক শহিদী রক্তে।

ভুলো না যথা, পরজনমের কথা কারণ,
ইহজনমের ফল পরজনমে করতে হবে বরণ।

দিয়ে যাও লিখিত দর্পন,
যা দেখে সবাই করবে পুষ্প অর্পন।

রেখে যাও কিছু স্মৃতি,
যা স্মরণে নতুনদের থাকবে না ভয়ভীতি।

অঙ্কিত করো তোমার ইতিহাস,
যা পড়ে হবে না কারো পরিহাস।

হে জনম, যুদ্ধ করো বরণ,
মহাপুরুষের ন্যায় তোমাকেও করবে স্মরণ।

**

বহুমুখী মেয়ে

দেখো, দেখো, এসো, চেনো আমাকে?
আমি তোমাদের খুব কাছের একজন।
হ্যাঁ গো, আমি সেই মেয়ে...
আমি এমন এক মেয়ে যে সময়সঙ্গী
আমি সময়স্রোতে ভাসি।
কখনো নদীর তলে অতই জলে নামি
কখনো নীল ঝিনুকের দরজা ভেঙে মুক্তা চিনিয়ে আনি।
কখনো আমি উড়ে বেড়াই মুক্ত ঘুড়ির বেশে,
কখনো আমি ছুটে বেড়াই কিশোরীর কাঁদামাখা পা বেশে,
কখনো আমি ফিরে আসি গোধূলি বেলাশেষে।
কখনো আমি হয়ে ওঠি রাখালের বাঁকা বাঁশরি।
কখনো আমি হয়ে ওঠি উড়ন্ত আঁচলে এলোমেলো উদাসিনী
কখনো আমি বাংলার বধূ স্বামী সোহাগিনী
কখনো আমি প্রিয়তমার জন্য অপেক্ষিতপ্রতিটি প্রহর
কখনো আমি কারো প্রথম পরশ কাঁপোনি থরথর
কখনো সরলমাতা, স্নিগ্ধ মায়ের কোল
কখনো খোকার ঘুমের গান, শ্যামল কথার বোল।

কখনো আমি হয়ে ওঠি ঝড় তুফানের ঘূর্ণন
কখনো আমি হয়ে ওঠি লাভা বেরোনো ভূমিকম্পন।
কখনো হয়ে ওঠি শোষকের কাছে মা কালি কিংবা মনসা দেবী,
মারি ছোবল, করি খান খান, হয় অসুরের বিনাশ

করি আমি চর্বন সেই অসুরের কালো মস্তক
করি আমি স্নান, রক্ত নদীর ধারায়
করি আমি তৃপ্ত, শান্ত মনকে নাড়ায়।
করি পুনঃপুনঃ চালাই তাণ্ডব, মাতি অসুর ধ্বংসলীলায়
করি সজীব পুরো ধরণী, সবাই সবাইকে শান্তি বিলায়।

যাই আমি এগিয়ে পায়ের পাতার চিহ্ন রেখে,
যাই আরো এগিয়ে সব বাঁধা বৈষম্যকে রূখে,
যাই সব কিছু ছিন্নভিন্ন করে,
কাঁপে আমার বজ্রকন্ঠে ক্ষণে ক্ষণে

এভাবে,
কখনো আমি যুদ্ধা, কখনো রণতরী,
কখনো পরিচিত মেয়ে।
দেখো সবাই, আমার মাঝে, আমি একা নাই দেখো,
আমার মাঝে অজস্র তাঁরার ন্যায় অসংখ্য মেয়ে।
দেখো, আমাকে আমি একা পাই না
শোনো, আমি অবলা নই, আমি সেই মেয়ে

আমি বহুমুখী মেয়ে, যার দৃপ্তকণ্ঠে হাজারো কন্ঠ দোল খেলে।
হ্যাঁ, আমি বহুমুখী মেয়ে। তোমরা সব শৃঙ্খল ভেঙে,
অন্যায়ে বেরিবাঁধ দিয়ে আমারি পূজা কর, আমারি জয়গান গাও।
কেন না, আমি বহুমুখী মেয়ে।

**

দুর্দমের জন্মতিথি

হও সূর্যের মতো প্রখর
আর চাঁদের মতো নির্জন
ভেসে হও নদীর মতো বহমান
আর সাগরের মতো স্রোতমান
ঢেউয়ের মতো উচ্ছল
জোছনার মতো সচ্ছল
বজ্রের মতো কণ্ঠ
হও অসময়ে আকুন্ঠ

বাতাসে ছড়াবে যত স্নিগ্ধ
নক্ষত্রাগ্নিতে করবে সব দগ্ধ
পর্বতের ন্যায় শৃঙ্গ
শূন্য ভেদিয়া অভ্র করবে ভঙ্গ
প্রকৃতি মতো হও প্রেমময়
যা পাথরের মতো অক্ষয়
জন্মেছো এ দিনে রহস্যময়ভাবে
এগিয়ে যাও দুর্বার তবে

আকুতি এই আমার।

কেকে/এএম
আরও সংবাদ   বিষয়:  আফরিমা ঈমা   কবিতা  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

সীমান্তে একাকার দুই বাংলা, ব্যতিক্রমী ‘সীমান্ত মিলন মেলা’
জবি ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, দুইজন শনাক্ত
চট্টগ্রামে ডিবি পরিচয় তুলে নেওয়া সেই জুয়েলকে গ্রেফতার দেখাল পুলিশ
দশমিনায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
মৌলভীবাজারে অপরিকল্পিত সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

সর্বাধিক পঠিত

ভিক্টোরিয়া কলেজে সংঘর্ষ, আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন
মাদারগঞ্জে রোগীদের বিএনপি নেতার ফলমূল ও নগদ সহায়তা
শ্রীমঙ্গলে দুই প্রতিষ্ঠানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা
মৌলভীবাজারে অপরিকল্পিত সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদে মানববন্ধন
জবি ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, দুইজন শনাক্ত

সাহিত্য- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close