ঢাকা, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গঙ্গাচড়ায় ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়ম

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
🕐 ৯:০৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৬, ২০২৪

গঙ্গাচড়ায় ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়ম

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুস্থ-অসহায় পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ও মর্ণেয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে। এই ২ ইউনিয়নে অসহায়দের চাল না দিয়ে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা তাদের আত্মীয় স্বজনদের চাল দেয়াসহ চাল বিতরণের ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। তালিকার সঙ্গে চাল পাওয়া লোকজনের নামেরও গরমিল পাওয়া গেছে।

 

ভুক্তভোগীরা জানান, শনিবার সকাল থেকে এই দুই ইউনিয়নে দুস্থদের মাঝে এসব বরাদ্দের চাল বিতরণ করা হয়। তাদের দাবি, এসব চাল বিতরণ করলেও অসহায়দের মাঝে বিতরণ না করে অধিকাংশ কার্ড ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। বাকিসব চালের স্লিপ চাল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।

শনিবার সকালে সরেজমিনে কোলকোন্দ ইউনিয়নে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে কয়েকজন লোকের হাতে স্লিপ দিয়ে ব্যবসায়ীরা বস্তা বদল করে চাল তুলে নিচ্ছেন এবং সব তুলে নেয়া চাল ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে খামাল দিয়ে রাখছেন।

মতিয়ার রহমান নামে (৬০) এক চাল ব্যবসায়ীর কাছে চাল কিনে নেয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো আমার চাল না, এগুলো চাল হচ্ছে সাধারণ মানুষের। আমি এখান থেকে কোনো চাল কিনি নাই। এসময় পূর্নিমা রানী (৫৫) নামে এক নারী ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই চাল ব্যবসায়ীকে বলেন, ‘আপনি মুসলমান মানুষ রোজা থেকে মিথ্যা কথা বলতেছেন ক্যানো? আমার সামনেই তো আপনি চেয়ারম্যানের এক লোকের থেকে ৭টা স্লিপ কিনে নিলেন। পরে ওই চাল ব্যবসায়ী সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে ৫টি বস্তা ভর্তি চাল ওই ব্যবসায়ীর ছেলে এসে ভ্যানে করে নিয়ে যান।

এছাড়াও মাহমুদা বেগম, নুরজাহানসহ ২০ থেকে ২৫ জন নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘চেয়ারম্যানের লোকজন একেকজনে ৫০ থেকে ১০০টি স্লিপ পর্যন্ত এই ইউনিয়ন পরিষদে বিক্রি করে দিল, তবু হামার মতো গরিব মানুষক দিল না। গরীব মানুষের রেজেক মারি খায় দেখি তো এখনকার চেয়ারম্যান মেম্বাররা নেংড়া-নুলা হয়।

এদিকে মর্ণেয়া ইউনিয়নে ঘুরে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়, ইউপি চেয়াম্যান ও সদস্যরা তাদের পছন্দের লোকজনকে শুধু স্লিপ দিয়েছে।

এসব চাল এভাবে বিক্রির বিষয়ে কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ভাই আমার কাজ হচ্ছে চাল বিতরণ করা। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা যদি বিক্রি করে তাকে আমার কি করার আছে। আর কে কোথায় বিক্রি করলো তা যেনে আমার লাভ নাই।

পরে ইউপি চেয়ারম্যানকে সচিব আব্দুর রাজ্জাক মুঠোফোন দিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সচিব আপনাদের কি বলে আগে শুনেন, আর না শুনলে নিউজ করে দেন।

এবিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ মোবাশ্বের হাসান জানান, ‘চাল বিক্রির বিষয়ে যদি কোনো সঠিক প্রমাণ থাকে আমাদেরকে দেন আমরা ব্যবস্থা নিবো।

 

 
Electronic Paper