ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

একে একে নিভছে দেউটি

বাতিঘর ডেস্ক
🕐 ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ০১, ২০২১

একে একে নিভছে দেউটি

মৃত্যুর মিছিলে একের পর এক যুক্ত হচ্ছেন রাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা, যা বেদনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের মতো মহামারী করোনায় সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন দেশের নামি-দামি ও খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিরা। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে চলে গেলেন কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, ব্যাংকিং সেক্টরের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এবং জনপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক এটিএম শামসুজ্জামান। এই তিন গুণীজনকে নিয়ে আজকের আয়োজন। 

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ

দেশের আর্থিক খাতের বিশেষ করে ব্যাংকিং সেক্টরের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই ডেপুটি গভর্নর বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় পদ অলংকৃত করেছেন। পেশাগত দক্ষতা আর সততা তাকে দিয়েছিলো মর্যাদার স্থান। আর্থিক খাতের অনিয়ম নিয়ে ছিলেন সব সময় সোচ্চার। লেখক ও সংগঠক হিসেবেও খ্যাতি কুড়িয়েছেন। আজীবন যুক্ত ছিলেন শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলার সাথে। পেশাগত জীবনে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কৃষি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর। এরপর তিনি পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। সবশেষ পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ একজন সৎ ও দক্ষ পেশাজীবি হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন আজীবন। ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম নিয়ে তিনি সব সময়ই ছিলেন স্পষ্টবাদী। অন্যায়ের সাথে আপোষ না করার মানসিকতা তাকে দিয়েছিল ভিন্ন পরিচিতি। তাকে প্রধান করে ২০১০ সালে দেশের পুঁজিবাজারে ধ্বসের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও, লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডকে পুনরুদ্ধারে হাইকোর্টের আদেশে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তাঁকে। তার ছিল আরো কয়েকটি পরিচয়। ভালবাসতেন শিশুদের। আমৃত্যু জড়িয়ে ছিলেন ‘কচিকাঁচার মেলার’ সাথে। লেখক হিসেবেও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ। স্বপ্ন দেখতেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার। ২০১১ সালে বাংলা একাডেমি তাঁকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
ইব্রাহিম খালেদ ৪ জুলাই ১৯৪১ সালে গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোলে স্নাতকোত্তর ও আইবিএ থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবন
ইব্রাহিম খালেদ ১৯৬৩ সাল থেকে ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ১৯৯৬ সালে অগ্রণী ব্যাংক এবং ১৯৯৭ সালে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। ২০০০ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।

তিনি ৯ ডিসেম্বর ২০২০ সাল থেকে আমৃত্যু পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমৃত্যু জড়িয়ে ছিলেন ‘কচিকাঁচার মেলার’ সাথে। লেখক হিসেবেও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ । স্বপ্ন দেখতেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার। ২০১১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।

মৃত্যু
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শ্যামলীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয় খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৯ ফেব্রুয়ারি তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্বদ্যিালয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টেও। সেখানেই মারা যান তিনি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper