নদী দখলে ৪৭ হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৪২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯
এবার সারা দেশের ৪৭ হাজার নদী দখলদারের তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। এর মধ্যে শুধু ঢাকায় দখলদার ৯৫৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। সবচেয়ে বেশি দখলদার চট্টগ্রামে। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী নদী রক্ষা কমিশন এ তালিকা প্রকাশ করে। আইন অনুযায়ী, এ দখলদাররা নির্বাচনের অযোগ্য ও ব্যাংক ঋণ পাওয়ার অযোগ্য। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকে দ্রুত সার্কুলার জারি করতে হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।
এখন পর্যন্ত ৬১ জেলার ৪৬ হাজার ৭৪২ দখলদারের নাম প্রকাশ করেছে কমিশন। এতে রয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি, রাজনৈতিক ও প্রতিষ্ঠানের নাম। দখলের পরিমাণসহ তাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে ওয়েবসাইটে (হৎপপন.মড়া.নফ)। এর মধ্যে শুধু ঢাকায় দখলদার ৯৫৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, জেলাভিত্তিক যে নদ নদী আছে সেই দখলদার কাছ থেকেই এ সংখ্যা পাওয়া।
জানা গেছে, এ তালিকা দ্রুতই পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ নির্বাচন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকে। এরপরই শুরু করতে হবে উচ্ছেদের কাজ।
নদী নিয়ে কিছুদিন ধরে বেশ জোরেশোরে কাজ করছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়।
এর আগে নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে গেল ফেব্রুয়ারিতে রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। যেখানে দখলদারদের তালিকা তৈরি করে তা প্রকাশ করার নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় দখলদারদের তালিকা চেয়ে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেয় নদী রক্ষা কমিশন।
অসহযোগিতার কারণে নদী রক্ষায় সুফল নেই : প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে সরকারের নদী রক্ষার উদ্যোগে সুফল মিলছে না। উচ্ছেদ ও দখল চলছে সমান্তরালে।
একদিকে নদী থেকে দখল উচ্ছেদ হচ্ছে; অন্যদিকে আবার দখল হচ্ছে। এ কারণে নদী রক্ষায় কোনো সুফল মিলছে না। দেশের নদীগুলো শিল্পপতি ও ক্ষমতাসীনদের লুটপাটের কবলে। সরকারের ওপর মহল থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে, তা নিচের স্তরে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
বিশ্ব নদী দিবস সামনে রেখে গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন এ অভিযোগ করেন।
মতিন বলেন, নদী রক্ষায় বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনগুলোর দীর্ঘদিনের দাবিতে সরকার গুরুত্ব দেয়নি। দুর্নীতিবাজ আমলা ও প্রভাবশালীদের কারণে নদী দখল রোধ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নদী রক্ষায় বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। নদী দখলকালীদের চিহ্নিত করে, তাদের তালিকা দেশের জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত সরকারিভাবে সারা দেশে চার হাজার ৪৪৩ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ তালিকা ধরে পর্যায়ক্রমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান বাপার সাধারণ সম্পাদক।
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্ব নদী দিবস সামনে রেখে আগের দিন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে- ওই দিন সকালে ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে ঢাকায় ৭০টি সংগঠনের নেতাকর্মী জমায়েত হয়ে পদযাত্রা শুরু করবেন। এটি বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে সদরঘাট টার্মিনালে গিয়ে শেষ হবে। এরপর নদী রক্ষায় বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা হবে। এতে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার করা রয়েছে। এ পদযাত্রায় সব শ্রেণীর মানুষকে অংশ নিয়ে নদীর সামনে দাঁড়িয়ে দখলের প্রতিবাদ জানানো আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য সচিব মিহির বিশ্বাস, বাপার যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল ও রিভারাইন পিপলের প্রধান নির্বাহী শেখ রোকনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
![](http://www.kholakagojbd.com/images/archive-image.jpg)