ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দেশে প্রতিদিন পরোক্ষ ধূমপানের শিকার ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ

অনলাইন ডেস্ক
🕐 ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ, মে ২২, ২০২৪

দেশে প্রতিদিন পরোক্ষ ধূমপানের শিকার ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ

বাংলাদেশে বিভিন্ন জনসমাগমস্থল ও গণপরিবহনে প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। আইনের দুর্বলতার কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব দুর্বলতা চিহ্নিত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) আলোকে আইন সংশোধন করা প্রয়োজন।

 

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ভবনের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মো. রাশেদ রাব্বি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী।

তিনি বলেন, দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। একই সাথে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া তামাক ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। এর কারণ বাংলাদেশ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রণোদনা নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে এখনও সর্বোত্তম মান অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। তাই বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উপনীত করতে দ্রুত এফসিটিসি’র আলোকে সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এর মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে বিএমএ। তামাকের ভয়াবহতা থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষা করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বিদ্যমান আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন। কারণ আইনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি (সিএসআর)-এর আড়ালে তামাক দ্রব্যের ওপর তরুণদের আকৃষ্ট করছে; যা তামাক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ করে বিদ্যমান তামাক আইন সংশোধন করা প্রয়োজন।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে দেশে অসংক্রামক রোগ যেমন-হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগ ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। আর এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার। তাই এই অকাল মৃত্যু ঠেকাতে অবিলম্বে বিদ্যমান আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

জনস্বাস্থ্যকে সর্ব্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, তামাকের ক্ষতি থেকে সাধারণ মানুষের সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উপনীত করতে আমার দিক থেকে সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।

 

 
Electronic Paper