তারুণ্যের ঈদ ভাবনা
অনলাইন ডেস্ক
🕐 ৪:১৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৬, ২০২৪
ঈদ-উল ফিতর বা রোজার ইদ মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। দীর্ঘ এক মাস রোজা পালনের পর আমাদের সামনে হাজির হয় পবিত্র দিনটি। ঈদকে ঘিরে চাঁদ রাত থেকেই ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে মুসলমানদের ঘরে ঘরে। আনন্দ-উচ্ছ্বাসে নব জোয়ার উদ্বোধিত হয় আমাদের মনে প্রাণে। সেই আনন্দকে ভাগাভাগি করতেই দূর দূরান্ত থেকে নাড়ির টানে আপন নীড়ে ফেরে সবাই। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কত শত ঝামেলা চুকিয়ে পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ করতে যান শিক্ষার্থীরা। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের-ফিতরের ভাবনায় কথা বলেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের মতামত তুলে ধরেছেন মোহাম্মদ রিমেল...
‘ঈদ হাজারও কষ্টের মাঝে হাসি ফোঁটায়’
ঈদ হাজার কষ্টের মাঝেও সবার মুখে হাসি ফোঁটায়। সেই আনন্দে মত্তহারা হয় আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত। আমাদের দুটি উৎসবের মধ্যে অন্যতম উৎসব রোজার ঈদ। এক মাস সিয়াম সাধনার পর খুশির আমেজ নিয়ে আসে পবিত্র এ দিনটি। একে অন্যের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শিকড়ের টানে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে চলে আপনজনের কাছে। পরিবার, পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ঈদ উদযাপনে আনন্দের নতুন মাত্রা সৃষ্টি করে। ঈদে সবচেয়ে বেশি আমেজ দেখা যায় ছোট ছেলে-মেয়ে এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে। তাদের পড়নে নতুন নতুন পোষাকের সংমিশ্রণে হাসিমাখা মুখগুলো নব উল্লাসের সৃষ্টি করে।
মোহাম্মদ বায়েজীদ
শিক্ষার্থী :বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
‘সম্প্রীতি এবং ভ্রাতৃত্ব তৈরিতে ঈদ উৎসব’
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। আর তা যদি হয় ঈদ-উল-ফিতর তবে তো কথাই নেই। আনন্দ আর খুশির মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুণ। দীর্ঘ এক মাসের সংযম, ত্যাগ ও সিয়াম সাধনার পর এই দিনটি খুব আনন্দের। বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ। ঈদ উল ফিতর বা রোজার ঈদ আমাদের বৃহত্তম বাৎসরিক উৎসব। তবুও জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি মানুষ ঈদ আনন্দে সামিল হয়। সকল দুঃখ-কষ্ট ভুলে ঈদের দিনে সাধ্য মতো খুশিতে মেতে উঠেন সবাই। নতুন পোষাক পড়ে সকাল থেকে শুরু করে সারাটা দিন যেমন ফুলের মতো ঘুরে বেড়ায়। ঈদের নামাজ শেষে সবাই যখন খুশি মনে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করে যা ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে অটুট রাখে।
ইসরাত জাহান সুমাইয়া
শিক্ষার্থী : নৃবিজ্ঞান বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
‘ঈদের মূলমন্ত্র হোক পরার্থেই আনন্দ’
মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা শেষে শাওয়াল মাসের বাঁকা চাঁদ আসে পরম আনন্দ আর আত্মতুষ্টির বাহন হয়ে। রোজাদার যে পবিত্রতা, উদারতা ও বদান্যতা সৌকর্য দ্বারা অভিষিক্ত হন, তার গতিধারা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্যই সমাগত হয় ঈদুল ফিতর। কাজেই অর্থনৈতিক দিক থেকেই হোক আর সামাজিক ভিত্তিতেই হোক, সমাজের প্রতিটি মানুষ যখন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসায় যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত হবেন তখন সেটিই হবে ঈদের মূল আনন্দ। ফলশ্রুতিতে, ঈদ উৎসবে সকলের মাঝে দাম্য আর মৈত্রীর বন্ধন রচিত হবে। এজন্য বলা বাহুল্য যে স্বপ্নগুলো সত্যি হোক, আশাগুলো পূর্ণ হোক জীবন হোক ধন্য; দুঃখ সব দূরে যাক, সুখে মন ভরে যাক শুভেচ্ছা সবার জন্য।
মাহিনুর ইসলাম মাহিন
শিক্ষার্থী : বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
‘ধনী-গরিবের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ুক ইদের খুশি’
সংযমের মাস শেষে উদযাপিত হয় উৎসবমুখর ঈদ। ঈদকে আনন্দময় করতে ছোট-বড় সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে নানান কাজে। ইসলামের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি অনুযায়ী প্রতি বছরই আসে ঈদ। রমজানে আত্ম-পরিশুদ্ধির পর উৎসবের আমেজ নিয়ে ঈদ আসলেও সমাজে সকল শ্রেণির মানুষের ঈদ সমান কাটে না। এই বৈষম্যের চিত্র দেখে আসছি ছোটবেলা থেকেই। লাল-নীল বাতির আলোর চাকচিক্যময় শহরে ঈদ উদযাপনে এত ব্যবধান! আমরা নিজ জায়গা থেকে যদি ঠিকমত যাকাত দিয়ে থাকি তাহলে এই দৃশ্যটা কিছুটা বদলানো সম্ভব। রমজান মাস থেকেই আমাদের কত পরিকল্পনা, কেনাকাটা এবং আয়োজন অথচ একটু সময় নিয়ে যদি আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের কথা ভেবে তাদের জন্য যদি কিছু করি তাদের ইদও ভালো কাটবে। তারাও এই আনন্দের অংশীদার হতে পারবে।
রাবেয়া আক্তার
শিক্ষার্থী : ফার্মেসি বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়