সুখী মানুষ হয়ে উঠার গল্পগুলো
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ৮:০৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০২৩

মানুষ সব সময়ই সুখ খুঁজে বেড়ায়। সুখ খুঁজতে খুঁজতে অসুখী হয়ে উঠছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। কিন্তু তারুণ্য দুর্বার! শুধু সুখ খুঁজে নিয়েই ক্ষ্যান্ত হয় না এই প্রজন্ম, সুখ বিতরণ করে অসুখী মানুষদের মধ্যে। ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে অফ হ্যাপিনেস’-এ কিছু সুখী মানুষের সুখ খুঁজে পাওয়ার গল্প তুলে ধরেছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মী মো. বরাতুজ্জামান স্পন্দন।
সকলের ‘সুখ’ নিশ্চিত করছে কলমযোদ্ধারা
বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার দিন থেকেই লেখালেখির প্রতি ভালবাসার জায়গা থেকে গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (গবিসাস) সাথে যুক্ত হই। শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়ন, ছাত্র-শিক্ষক বা অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের পাশাপাশি আস্থার জায়গার সবটুকু দখল করে আছে এই সংগঠনটি। এটাই আমাকে মুগ্ধ করেছিলো প্রথম থেকে। সাহিত্যের ঝংকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্য বর্ণনার পাশাপশি সূক্ষ্ম নজরদারির মাধ্যমে যেকোনো খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সুন্দরতমভাবে তুলে ধরার ব্যাপারটা অসাধারণ লাগতো। অন্যের করা কাজ দেখে ভালোলাগার জায়গা থেকে এর সাথে যুক্ত হওয়া এবং ভালোভাবে কাজ শিখে বর্তমানে নিজে এর একটি অংশ হয়ে যেকোনো পরিস্থিতি সকলের কাছে তুলে ধরতে পারাটা আমার জন্য খুবই আনন্দের ব্যাপার। কখনো কারোর সমস্যা সামনে তুলে ধরে তার সমাধান করা অথবা কারোর ভালো বিষয় গুলো সকলের সামনে উপস্থাপন করার মাধ্যমে নিজে যেমন সুখ খুঁজে পাই তেমনি অনেকগুলো মানুষের সুখের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারি। এই অনুভূতিটা আমার কাছে অমূল্য। কলমযোদ্ধাদের হাত ধরে এই ভালোলাগা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ুক এটাই আমার চাওয়া।
নাজমুল হাসান তানভীর
সহ সভাপতি
গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস)
ফটোগ্রাফিতে সুখের খোঁজ!
একজন ছবিপ্রেমীর জন্য সুখের সংজ্ঞা হতে পারে তার কাজ থেকে সন্তুষ্টি এবং উৎসাহ পাওয়া। আমার সংগঠন আমার জীবনের অপূর্ণ স্বপ্নগুলো পূর্ণ করতে সহায়তা করেছে। আমি একজন ফটোগ্রাফিপ্রেমী এবং আমার কাজ ফটোগ্রাফি করে ছবির মাধ্যমে মুহূর্তগুলো ধরে রাখা। আমার সংগঠন আমার ফটোগ্রাফির সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করার পাশাপাশি সাংগঠনিক কাজের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন মানুষ ও পরিবেশের সাথে কাজ করার সুযোগ করে দেয়। যা নিঃসন্দেহে আমার সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। আর এই সাংগঠনিক কাজের সাথে আমি যতোই সম্পৃক্ত হচ্ছি ততোই ছবিকে ভালবাসতে শিখেছি। আরো ভালোলাগে যখন আমার তুলা ছবিগুলোর প্রশংসা করে কেউ, আমার ছবিগুলো কেউ শেয়ার করে। তারপর ছবি তোলার জন্য শাটারের প্রতিটি ক্লিকের মাধ্যমে নিজের মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে, নিজের কাজের প্রতি গর্ব হয় এবং আরও ভালো ফটো তোলার অনুপ্রেরণা পাই। আমার সংগঠনই আমায় সে অবস্থান তৈরি করে দিয়েছে।আর যখন আমি নিজের কোনো কাজের মাধ্যমে কারোর ভালো লাগার কারণ হতে পারি, সংগঠনকে তুলে ধরতে পারি তখন নিজের মধ্যে আলাদা একটা সুখ অনুভব করি। হয়তোবা এই সুখটাই আমার পরিশ্রমের পারিশ্রমিক!
শোয়েব বিন কামাল
সভাপতি
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (জিবিপিএস)
মানবসেবায় ‘সুখ’ বিতরণে মেডিসিন ক্লাব
আমার মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে সাধারণ মানুষদের সেবা করা। আর এজন্য একটা প্ল্যাটফর্ম দরকার ছিলো। মানুষের চিকিৎসা কিভাবে করতে হবে তা তো বই আর শিক্ষকদের থেকেই জানবো কিন্তু প্রকৃত মানবসেবা কিভাবে করতে হয় সেটা আমি আমার সংগঠন থেকে শিখেছি। আমরা গরীব দুঃখীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বিনা পয়সায় রক্তদান ও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে যেমন সুখী মানুষদের মধ্যে খুঁজে পাই তেমনি সেবা গ্রহণকারী দুস্থদের মুখে অমূল্য হাসি দেখে সব ক্লান্তি ভুলে তখন নিজেকে স্বার্থক মনে হয়। আমরা আমাদের এ কাজকে অনেক ভালোবাসি কারণ এতে গরিব দুঃখী মানুষদের কিছুটা হলেও দুঃখ কমে যাচ্ছে, উপকার হচ্ছে। আর এ ভালোলাগা থেকেই আমরা এ সংগঠনের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি এবং এভাবেই ভালবাসা বিতরণ করে যেতে চাই আজীবন।
মুস্তাকিম আহমেদ খান তনয়
সভাপতি
মেডিসিন ক্লাব গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ ইউনিট
অসুখী মানুষের ‘সুখ’ নিশ্চিতে রক্তদান ও চক্ষুদান সেবায় সন্ধানী
সমাজসেবামূলক কাজ করতে ভালো লাগে তাই সংগঠন করি। আমার বিশ্বাস এই জায়গাটাতে সংগঠনের সাথে কাজ করা প্রত্যেকের আবেগ প্রায় একই রকম। স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘সন্ধানী’র সাথে আমি কাজ করি কারণ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে আমার সব সময়ই ভালো লাগে যা সন্ধানীর কার্যক্রমের মাধ্যমে আরো ত্বরান্বিত হয়েছে। তাছাড়া আমার সংগঠনের মাধ্যমে মানুষ স্বেচ্ছায় রক্ত দিচ্ছে, এমনকি মৃত্যু পরবর্তী অঙ্গদানও করছে৷ এমনকি বাংলাদেশে একমাত্র সন্ধানীই মরণোত্তর চক্ষুদানে সহায়তা করে থাকে। এমন মহান সব কাজের সাথে যুক্ত থাকতে পেরে যেমন নিজের ভালো লাগে, তেমনি আমাদের কার্যক্রমের দ্বারা যখন কারোর জীবন বেচেঁ যায় বা বিপদ দুর হয় তখন ঐ মানুষজনের ভালোলাগা দেখে সুখময় দুনিয়ার স্বপ্ন দেখতে পারি। তাছাড়া মানুষকে টাকা পয়সা কিংবা ঘরের বাজার দিয়ে সাহায্য করা যায়, এটা অনেকেই করতে পারে। কিন্তু সন্ধানী যা করছে তা অনন্য। সুখ বিতরণের জন্য এর চেয়ে বড় কোন মাধ্যম থাকতে পারে?
মো. আবু নাসের নেয়ামুল
সাধারণ সম্পাদক
সন্ধানী গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ ইউনিট
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
