মিলছে না গ্যাস, বাড়ছে দাম, উদ্যোক্তাদের কপালে ভাঁজ
অনলাইন ডেস্ক
🕐 ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩

সাভারের লিটল স্টার স্পিনিং মিলে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে দিনের ১২-১৪ ঘণ্টা গ্যাস থাকছে না। গ্যাস-সংকটের কারণে কারখানাটি সুতা উৎপাদন সক্ষমতার ৫০-৫৫ শতাংশ করতে পারছে। তাতে প্রতি কেজি সুতা উৎপাদনে বাড়তি খরচ হচ্ছে ৭৪ টাকা। সুতা বিক্রি করে বাড়তি খরচের বড় অংশ তোলা যাচ্ছে না। তাতে প্রতি কেজিতে নিট লোকসানের পরিমাণ ৪২-৪৫ টাকা।
গতকাল বুধবার দুপুরে গ্যাসের দাম বাড়ানোর চূড়ান্ত ঘোষণা দেয় সরকার। বিকেল পৌনে পাঁচটায় লিটল স্টার স্পিনিং মিলের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের সঙ্গে কথা হয়। ভিডিও কলে তিনি দেখালেন, গ্যাসের মিটারে চাপ ১ দশমিক ১ পিএসআই (গ্যাসের চাপ মাপার একক)। এই চাপে কারখানার উৎপাদন সম্ভব না।
খোরশেদ আলম বলেন, ‘গ্যাস-সংকটের কারণে গত মাসে ২৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। অন্যান্য হিসাব করলে সেটি কয়েক গুণ বেশি হবে। এই অবস্থায় গ্যাসের দাম বাড়লে কী হবে, বুঝতে পারছি না। হয়তো কারখানা বন্ধই করে দিতে হবে।’
গ্যাসের দাম বাড়ায় খোরশেদ আলমের মতো অনেক শিল্পোদ্যোক্তা বড় ধরনের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। উদ্যোক্তারা বলছেন, গ্যাসের দাম এক লাফে এতটা বাড়বে, এমনটা তাঁরা কল্পনাও করেননি। এ দাম কার্যকর হলে অনেক শিল্পকারখানাই লোকসানে চলে যাবে।
আবার ফেব্রুয়ারিতে নতুন দাম কার্যকরের পাশাপাশি যদি গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা না হয়, তাহলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। তখন কারখানা বন্ধ করা ছাড়া ভিন্ন কোনো উপায় থাকবে না।
জানতে চাইলে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সামির সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, করোনা, যুদ্ধ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মিলিয়ে দেশের ব্যবসায়ীরা হিমশিম খাচ্ছেন। এ সময় যেকোনো জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি চাপ তৈরি করবে।
এত দিন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় শিল্পভেদে গ্যাসের দাম ভিন্ন ভিন্ন ছিল। প্রথমবারের মতো জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ চা-শিল্প ছাড়া অন্য সব শিল্পের গ্যাসের ইউনিটের দাম ৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে।
শিল্পখাতে গ্যাসের অন্যতম বড় ভোক্তা বস্ত্র ও সিরামিকশিল্প। বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গ্যাসের এমন দাম বাড়ানোর কারণে উদ্যোক্তারা উদ্বিগ্ন। প্রতি কেজি সুতা উৎপাদনে এত দিন গ্যাসের খরচ ছিল ২৫ সেন্ট। এখন সেটি ৪৯ সেন্টে দাঁড়াবে।
তখন ভারতীয় সুতার সঙ্গে প্রতিযোগিতা টিকতে পারব না আমরা। আমদানি বাড়বে।’ অন্যদিকে সিরামিক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিসিএমইএর সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন বলেন, গ্যাসের দাম ১৫০ শতাংশ বাড়ছে। তাতে কারখানা টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন হয়ে পড়বে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, বাধ্য হয়েই গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার।
তবে সব শিল্পের গ্যাসের দাম এক করা ঠিক হয়নি। এতে ছোট-মাঝারি শিল্প চাপে পড়বে। তাই ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য ভিন্ন দাম হওয়া দরকার।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
