ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

সুজন সারোয়ার, গাজীপুর
🕐 ৪:৩৩ অপরাহ্ণ, জুন ০৫, ২০২৩

ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক আলী আজমের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক তরুণী। সোমবার মধ্যরাতে টঙ্গীর স্থানীয় একটি হাসপাতালে সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন তিনি।

এসময় ওই তরুণী বলেন, দুই বছর আগে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলায় কর্মরত ছিলেন ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আলী আজম। চাকরির সুবাদে পরিচয় হয় গাইবান্ধার ওই তরুনীর সাথে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই তরুণীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন আলী আজম। এসময় তরুণীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। এরপর হঠাৎ তার বদলি হয়ে যায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে।

কিছুদিন পর তরুণীকে গাজীপুরে নিয়ে এসে টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকায় স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখতে বার বার বাসা পরিবর্তন করতেন তিনি। একপর্যায়ে তার আচরণ বিধি সন্দেহ হলে বিয়ের জন্য চাপ দেন ওই তরুণী। বিভিন্ন তালবাহানায় কালক্ষেপন করতে থাকেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। একপর্যায়ে নিজের স্ত্রী সন্তানের দোহায় দিয়ে তরুণীকে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করেন আলী আজম।

এনিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলে কৌশলে তরুণীকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে বাসা পরিবর্তন করেন আলী আজম। বাড়িতে গিয়ে তরুণী তার সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে পুনরায় গাজীপুর এসে তার সন্ধান করতে থাকেন। এসময় এক পুলিশ সদস্যের সহায়তায় আজমের বাসার সন্ধান পান তিনি। পরে ওই বাসায় উপস্থিত হলে তরুণীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আজম। একপর্যায়ে তরুণীকে বাসা থেকে বের করে দেন পুলিশ কর্মকর্তা। পরে রোববার রাত আটটার দিকে টঙ্গী হোসেন মার্কেট এলাকায় কর্তব্য পালনকালে আজমের মুখোমুখি হন ওই তরুণী। এ সময় তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হলে স্থানীয় পথচারী ও কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর দৃষ্টিগোচর হয় বিষয়টি।

এরপর অসুস্থতার ভান করে একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি হন পুলিশ পরিদর্শক আলী আজম। পরে ঘটনাটি এড়িয়ে যেতে সোমবার ভোরে গোপনে হাসপাতাল ত্যাগ করেন তিনি। সোমবার সকালে ওই তরুণী গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার আলমগীর হোসেনের কাছে মোখিক অভিযোগ করেন। অভিযোগের খবর পেয়ে তরুণীকে কৌশলে ডেকে এনে টঙ্গীর একটি রেস্তোরাঁয় বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করেন আজম। আলোচনাকালে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করলে অসুস্থ হয়ে পরে ওই তরুণী। খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে তরুণীকে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ট্রাফিক পরিদর্শক আলী আজম।

ভুক্তভোগী তরুণী আরো বলেন, আমি আর দশজন নারীর মতো শরীয়ত মোতাবেক তার সাথে সংসার করতে চাই। তিনি দীর্ঘ দেড় বছর যাবত আমার সাথে স্বামী-স্ত্রীর মতো ছিলেন। আমি বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় তিনি এখন আমার সাথে দুর্ব্যবহার করছেন। প্রয়োজনে আমি আইনের আশ্রয় নেব।

এ বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক আলী আজম এর সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। খুদেবার্তা পাঠালেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী তরুণী আমাদের কাছে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন আমরা তাকে লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 
Electronic Paper