ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফরিদপুরে বাবা ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় আটক ৪

এস, এম আকাশ, ফরিদপুর
🕐 ৫:৫২ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০২৩

ফরিদপুরে বাবা ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় আটক ৪

ফরিদপুরের মধুখালীতে স্কুলের ক্লাসরুমে আটকে রেখে বাবা ও ছেলেকে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত আরো চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

সোমবার পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের এই ৪ জনকে আটক করে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। সোমবার দুপুর ২ টার দিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আটককৃত এ চারজন হলেন, মধুখালীর উপজেলার মাঝকান্দি গ্রামের আসাদুল মোল্যার ছেলে ফরমান মোল্যা (২১), শাজাহান মোল্যার ছেলে সজিব মোল্যা (২২), ও শিবরামপুর গ্রামের নবিয়াল শেখের ছেলে জুবায়ের শেখ (২০) ও নূর ইসলাম ভূইয়ার ছেলে হাসিব ভুইয়া (২০)।

এ সময় পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, তাদের নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এর আগে ওই মামলায় আরো তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। যদিও তাদের মধ্যে দুজন জামিনে বেড়িয়ে এসেছেন। তবে মামলার প্রধান আসামি কুতুবউদ্দিন এখনো জেলে রয়েছেন। আমরা প্রথম থেকেই এ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।

পুলিশ সুপার বলেন, যে মেয়েটির কথা এখানে বলা হয়েছে সে ইয়ামিন মৃধার প্রথম স্ত্রীর মেয়ে। মেয়েটি হওয়ার পরই তার মা মারা যান। দুই মাস আগে মেয়েটিকে স্কুলে ক্লাস টুতে ভর্তি করে দেয় তার সৎ ভাই রাজন। তবে মেয়েটিকে বাড়ি নিয়ে যেতে চায় ওই স্কুলেরই একজন নিঃসন্তান শিক্ষিকা । মেয়েটিকে তিনি দু’বার তার ফরিদপুরের বাড়িতেও নিয়ে যান। শেষবার তিনি কাউকে না জানিয়ে মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর গত ১৭ মার্চ তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই তার বাবাকে স্কুলে ডেকে নেয়া হয়েছিলো। এরপর তার ভাইকেও ডেকে নেয়া হয়। তারপর তাদের ওপরে নির্মম নির্যাতন করা হয়।

তিনি বলেন, বাবা ও ছেলেকে নির্যাতনের আগে মেয়েটির একটি ভিডিও করা হয় যেখানে সে তার বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করে। আর ভাইরাল হওয়া নির্যাতনের ভিডিওটিও আমরা প্রথমে পাইনি। এজন্য প্রথমেই যৌন নির্যাতনের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারিনি। তবে ঘটনার পরেরদিন তার বাবা ও ছেলেকে ডেকে এনে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত কথা বলে আমরা বুঝতে পারি যে, বাবা এ অভিযোগ থেকে মুক্ত। পরে মেয়েটিকে যখন মেডিকেল টেস্ট করার জন্য পাঠিয়েছি তখন সে সত্য কথা বলেছে।

সে আদালতে জবানবন্দিতে বলেছে, ‘আমাকে যৌন নির্যাতন করা হয় নাই। আমি মেডিকেল টেস্ট করাতে চাই না। ওই মহিলা আমাকে প্রলোভন দেখিয়েছে। টাকা দিয়ে বলেছে, যে তোর ভাই আর বাবার বিরুদ্ধে এসব কথা বলবি। আর ওই মহিলাকে একথা বলার জন্য ঠিক করেছেন ওই স্কুল শিক্ষিকা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার শাহজাহান বলেন, মেয়েটি আমাদের কাছে এসব কথা বলে নাই বরং কোর্টে বলেছে। এজন্য তার আগেই রাজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে এখন বুঝতে পারছি রাজন মৃধা নির্দোষ। আমরা এ মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিবো এবং রাজন সংশোধনাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে যাবে।

উল্লেখ্য : গত ১৭ মার্চ মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে ইয়ামিন মৃধা (৪০) ও তার ছেলে রাজন মৃধা (১৫) কে নির্মম নির্যাতন করা হয়। এরপর নির্যাতনের ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

 
Electronic Paper