ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অগ্নিকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন লাফ দিয়ে বেঁচে ফেরা দুইজন

অনলাইন ডেস্ক
🕐 ৯:২৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ০১, ২০২৪

অগ্নিকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন লাফ দিয়ে বেঁচে ফেরা দুইজন

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আগুনে দগ্ধ হয়ে বেশ কয়েকজন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে দুইজন অগ্নিকাণ্ডের সময় ভবনটিতে যা ঘটছিল তার বর্ণনা দিয়েছেন।

 

শুক্রবার (১ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে গণমাধ্যমে ঘটনার বর্ণনা দেন আগুন থেকে বেঁচে ফেরা কামরুল হাসান ও জুবায়ের। তারা দুজনেই ভবনটির দুটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন।

তারা জানান, আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো ভবন ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে যায়। ধোঁয়ায় লোকজনের শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। বাঁচার জন্য লোকজন এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। অনেকে গ্লাস ভেঙে গ্রিল ধরে নামেন। আবার অনেকে প্রাণ বাঁচাতে ভবন থেকে লাফ দেন।

আগুন লাগা ভবনটির নিচতলায় অবস্থিত ‘মেজবানি খানা’ রেস্টুরেন্টের কর্মী কামরুল হাসান। আগুন থেকে প্রাণ বাঁচাতে রেস্টুরেন্টের কিচেনে ফাঁকা জায়গা দিয়ে নিচে লাফ দেন তিনি। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কামরুল হাসান বলেন, প্রথমে একটা শব্দ পেয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে গেটের সামনে আগুন দেখতে পাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো বিল্ডিংয়ে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। আমরা গেট দিয়ে বের হতে না পেরে ওপরের দিকে উঠতে থাকি, কিন্তু সিঁড়িতে ৫ তলা পর্যন্ত গিয়ে আটকে যাই। সেখানে অনেক লোক অবস্থান করছিল। প্রচুর লোকের কারণে আমরা আর উপরে উঠতে পারিনি। ওই ফ্লোরে একটা রেস্টুরেন্ট ছিল। আমরা কিছু মানুষ তখন সেখানে আশ্রয় নিই। কিন্তু ধোঁয়ায় লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়ছিল, নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় যায় অবস্থা। যে যার মতো এদিক-ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে। এসময় রেস্টুরেন্টের কিচেনে একটু ফাঁকা দেখতে পেয়ে, সেটি দিয়ে আমি নিচে লাফ দেই। তারপর আর আমার কোনো হুঁশ ছিল না।

তিনি বলেন, আমি ওখানে ১ বছর ধরে কাজ করি। লিফট আর সিঁড়ি ছাড়া ভবনটি থেকে নামার জন্য জরুরি কোনো ব্যবস্থা ছিল না।

অন্যদিকে ভবনটির তিনতলায় অবস্থিত খানাস রেস্টুরেন্টের কর্মী জুবায়ের অগ্নিকাণ্ডের সময় ছাদ থেকে লাফ দিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন। তবে আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

জুবায়ের বলেন, ঘটনার সময় আমি খাবার তৈরির কাজ করছিলাম। পরে আমাদের ক্যাশিয়ার এসে বলেন নিচে আগুন লাগছে। সবাই উপরে আসেন। আমি বের হয়ে নিচে নামতে গেলে দেখি সবাই উপরে উঠে আসছে। আর নিচ থেকে সিঁড়ি দিয়ে কালো ধোঁয়া উপরে উঠছে। পরে দৌড়ে ছাদে যাই। সেখানে অনেকের দেখাদেখি আমিও ছাদ থেকে লাফ দেই। তারপর আর কিছু মনে নাই। আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

কাচঘেরা বদ্ধ ভবনে বাতাস আসা-যাওয়ার মতো কোনো অবস্থা ছিল না। ফলে ধোঁয়ায় পুরো ভবন অন্ধকার হয়ে যায়। আর ভবনটির রেস্টুরেন্টগুলোতে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার নিচে থাকে বলে জানান তিনি।

 

 
Electronic Paper