সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: শিক্ষা ভবনের সামনে ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ      হামাস-ইসরায়েল বন্দি বিনিময় শুরু, প্রথম দফায় ৭ জিম্মি হস্তান্তর      ভারী বর্ষণ-বন্যায় মেক্সিকোতে নিহত ৪৪, নিখোঁজ ২৭      ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      
দেশজুড়ে
কৃত্রিম আলোয় ড্রাগন চাষে তিন বন্ধুর বাজিমাত
বাঞ্ছারামপুর ( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০:০১ এএম আপডেট: ২৬.০২.২০২৫ ১:১৭ পিএম
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

রাতে লাইটিং করে শীতকালে ড্রাগন ফল উৎপাদনে সফল হয়েছেন তিন বন্ধু । তারা বলেন, ড্রাগন মূলত গ্রীষ্মকালীন ফল। এ সময় যে উৎপাদন হয় তার চেয়ে বেশি ফলন হয় লাইটিং পদ্ধতিতে। অফ সিজনে দাম পাওয়া যায়, প্রায় দ্বিগুণ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালি ইউনিয়নের গোটকান্দি গ্রামে রাতের বেলায় বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফল। আর তাতে সরকারের কৃষি বিভাগের বিনামূল্যে দেওয়া সোলার দিয়ে চলছে সেচ কাজ।

শীতকালে রাতের বেলা দিনের পরিবেশ সৃষ্টি করে ড্রাগন চাষের এমনই উদ্যোগ নিয়ে ভালো ফলন পেয়েছেন উপজেলার  গ্রামের তিন চাষি বন্ধু ইকবাল, বিল্লাল ও সুজন। তারা তাদের গ্রামে ১ একর জমিতে এ পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। তার সফলতা দেখে এখন অনেকেই এ পদ্ধতিতে ড্রাগন ফল চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাতে যখন বৈদ্যুতিক বাতি একসঙ্গে জ্বলে উঠে, দূর থেকে আলোর রোশনাই নজরে আসে। দেখে মনে হয় আকাশে তারা জ্বলছে। সে এক মনোরম দৃশ্য। রাতে এই দৃশ্য দেখতে অনেকেই ছুটে আসেন ড্রাগন বাগানে। 

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, স্বাভাবিকভাবে মে মাসের শুরুর দিকে ড্রাগন গাছে ফুল আসা শুরু হয় যা চলে অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময়টিই ধরা হয় ড্রাগনের মৌসুম। কৃত্রিম  আলো দিয়েও মৌসুম ছাড়া (নভেম্বর থেকে এপ্রিল) ড্রাগন ফল উৎপাদন করা যায়। ড্রাগন ফল উৎপাদনের জন্য দীর্ঘ সময় সূর্যের আলোর প্রয়োজন হয়। অফ সিজনে সূর্যের আলো কম থাকায় ভালোভাবে ড্রাগন ফুল ফলে রূপান্তরিত হতে পারে না। আর এই সময়টাতে সূর্যের আলোর বিকল্প হিসেবে কৃত্রিম বৈদ্যুতিক বাল্বের আলো ব্যবহার করে চমৎকার ফুল ফু‌টি‌য়ে ফল উৎপাদন করা যায়।

বাগান মালিক ইকবাল, সুজন ও বিল্লাল বলেন, ২০২২ সালে ১ একর জমি লিজ নিয়ে ড্রাগন বাগান তৈরি করেন। ২০২৩ ও ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাধারণ পদ্ধতিতে চাষ করে আসছেন। বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.নাসির উদ্দিন শীতকালে ড্রাগন ফল চাষের প্রযুক্তি তাদের শিখিয়ে দেন। সে অনুযায়ী  প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ড্রাগনের ফুলে পরাগায়নের জন্য ৩ ঘণ্টা  লাইট জ্বালান। জমি দিনের আলোর মতো হয়ে যায়। লাইটিংয়ের ফলে রাতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ে। এতে বাগানে বেশি পরিমাণ ফুল ও ফল ধরছে। বর্তমানে বাগান ফুল-ফলে ভরে গেছে। ফল উঠছে। তিনি জানান, আগে তার বাগানে সিজনে মোট ২৫ টন ফল উৎপাদন হতো। নতুন পদ্ধতিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি ফলন হচ্ছে। ফলের মানও ভালো হচ্ছে। গ্রীস্ম মৌসুমে ফলের দাম কম থাকে। গত মৌসুমে প্রতি কেজি ড্রাগন ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে তার বাগানের ড্রাগন ৫০০-৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কথা বলে জানা গেছে,  তিন বন্ধু ইকবাল, বিল্লাল ও সুজন মি‌লে এক একর জ‌মি‌তে ১৫০০ খু‌টি‌তে  প্রায় ৬০০০ চারা সম্ব‌লিত আধু‌নিক ড্রাগন বাগান স্থাপন ক‌রে‌ছেন। প্রায় ‌তিন বছর হয় বাগান‌টি তারা প্র‌তিষ্ঠা ক‌রে‌ছেন। বাগান‌টি হ‌তে তারা এ পর্যন্ত ২২ লক্ষ টাকা বি‌ক্রি ক‌রে‌ছেন। সব‌চে‌য়ে বড় চম‌কের বিষয় তারা কৃ‌ষি বিভা‌গের পরাম‌র্শে কৃ‌ত্রিম লাই‌টের মাধ্য‌মে শীতকা‌লে (অর্থাৎ অসম‌য়ে) ড্রাগন উৎপাদন কর‌তে সক্ষম হ‌য়ে‌ছেন। এসম‌য়ে পাইকাররা সরাস‌রি বাগান হ‌তে ৫০০ টাকা কে‌জি দরে ড্রাগন কি‌নে নি‌চ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো নাসির উদ্দিন জানান, বাগান‌টি‌তে রেড ভেল‌ভেট, ‌ভি‌য়েতনামী লাল, বা‌রি ড্রাগন ১ ও বা‌রি ড্রাগন ২ জাতসহ বি‌ভিন্ন জা‌তের লাল, সাদা ও হলুদ ড্রাগন র‌য়ে‌ছে। ফ‌লের পাশপা‌শি তারা কা‌টিং বি‌ক্রি ক‌রেও লাভবান হ‌চ্ছেন। কৃ‌ষি অফিস হ‌তে এখা‌নে এক‌টি সৌর‌বিদ্যু‌তের মাধ্য‌মে  ড্রিপ ইরি‌গেশন প্রযু‌ক্তি স্থাপন করা হ‌য়ে‌ছে। গতকাল (২৫ ফেব্রুয়ারি) স‌রেজ‌মিন প‌রিদর্শনে অসম‌য়ে বাগা‌নে চমৎকার সাই‌জের ড্রাগন দে‌খে আমার খুব ভা‌লো লে‌গে‌ছে। বি‌শেষ ক‌রে কৃ‌ত্রিম লাইট ব্যবহার ক‌রে অসম‌য়ে ড্রাগন ফল উৎপাদন ক‌রে কৃষক যেমন লাভবান হ‌চ্ছেন ভোক্তারাও ড্রাগন পা‌চ্ছেন। বাগা‌নে কো‌নো রাসায়‌নিক কীটনাশক বা হর‌মোন বা ট‌নিক ব্যবহার করা হয় না। স‌ুতরাং এটি প‌রি‌বেশ বান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত।

প্রসঙ্গত, ড্রাগন ফল একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফসল। বাংলাদেশে ড্রাগন ফলের মৌসুম হলো মে-অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময়ে বাংলাদেশে ফলের প্রাপ্যতা প্রায় ৬০% কিন্তু শীতকালে ফলের প্রাপ্যতা থাকে ১৯%। শীতকালে ফলের প্রাপ্যতা বাড়ানোর জন্য কৃত্রিমভাবে আলো প্রয়োগ করে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে সারা বছর ড্রাগন ফল উৎপাদন করা যায়।

ড্রাগন ফল সুস্বাদু, পুষ্টির দিক থেকে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা কোলেস্টেরল কমায়, ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, লাল-মাংসের জাতের ড্রাগন ফলে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান বিদ্যমান রয়েছে।

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহে যুক্ত করার প্রস্তাবের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
নেত্রকোণায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
ফরিদপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
নওগাঁয় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
ডোমারে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত

সর্বাধিক পঠিত

বাঞ্ছারামপুরে অস্ত্রসহ ৫ ডাকাত গ্রেফতার
নালিতাবাড়ীতে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
বিশ্ব ব্যর্থতা দিবস আজ
অসুস্থ নাতনিকে দেখতে এসে লাশ হলেন নানা-নানি
শীর্ষ মানবপাচার চক্রের মূল হোতা আটক

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close