বড় হয়ে মনে হল ত্বক ও চুলের যত্নে আমি সবকিছু জানি। আমার মায়ের সব ঘরোয়া টিপস যেমন সাইনি চুলের জন্য চালের পানি, উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হলুদ বাটা, ব্রণের জন্য লেবুর রস আবার ব্রণের দাগের জন্য টুথপেস্টসহ কত কিছু। আমার মা যুগের পর যুগ বিশ্বাস করে মেনে চলেছে এসব। ত্বকের যত্নে কেমিক্যালের চেয়ে প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার সবচেয়ে নিরাপদ বহু দিন ধরে এই ধারণা চলে আসছে, কিন্তু বাস্তবতা একদমই ভিন্ন।
আমি নিজেও আমার মায়ের আর ঈদ ম্যাগাজিনে পাওয়া ত্বকের যত্নে এই চর্চাগুলো অভ্যাস করি। প্রতিদিন ঘরোয়া মিক্সার দিয়ে তৈরি ক্রিম মুখ আর চুলে ব্যবহার করে ভাবতাম, ঠিকই করছি। কিন্তু না, ধীরে ধীরে আমার ত্বক যখন রুক্ষ হতে শুরু করল, ত্বকে লাল আভা আসলো, আর চুলের আগা ফেটে গেল, তখন মনে হল- কিছু একটা ভুল হচ্ছে।
তখন শুরু করলাম ত্বকের যত্নে বিভিন্ন আর্টিকেল পড়া, ইনফ্লুয়েন্সারদের স্কিনকেয়ার ব্লগ দেখা আর এক্সপার্টদের পরামর্শ নেওয়া। আমি জানলাম, এই রূপচর্চার বেশিরভাগ পদ্ধতি ছিল ভুল বিশ্বাস থেকে। কেমিক্যাল সবসময় খারাপ নয়, এমনকি পানিও কেমিক্যাল। অনেক ল্যাবই এমন উপাদান তৈরি করে; যা প্রাকৃতিক নির্যাসের থেকেও উপযোগী। সঠিকভাবে প্রিজারভেটিভস ব্যবহারে আমাদের ত্বক ও প্রোডাক্ট ব্যাকটেরিয়া থেকে সুরক্ষিত থাকে। সবচেয়ে জরুরি হল নিরাপত্তা, সঠিক ডোজ আর ফর্মুলেশন ‘প্রাকৃতিক’ বা ‘কেমিক্যাল’ কিছু নয়।
এখন অনেক তথ্যের সহজ অ্যাক্সেস পেয়ে আমি ফরেন ব্রান্ডগুলোর ক্রিম, শ্যাম্পু আর তেল ব্যবহার শুরু করি। যেগুলোর বেশিরভাগই ছিল ইউএস এবং কোরিয়ার আর আমি ভেবেই নিয়েছিলাম, বিদেশী ব্র্যান্ড মানেই ভালো। কিন্তু, এগুলোও কাজ করল না। কারণ, এই প্রোডাক্টগুলো আমাদের ত্বকের টাইপ, আবহাওয়া বা আদ্রতার ভিত্তিতে তৈরি নয়। আমার ত্বকের উজ্জলতা বা চুলের ঘনত্ব কোনটিই হয়নি। অবশেষে বুঝলাম- হাই প্রাইস কিংবা বিদেশী অরিজিন হলেই যে তা কার্যকরী হবে, বিষয়টা এমনও না।
ঠিক এমন সময়ে দেশীয় ব্রান্ড আমার চোখে পড়ল। তারা গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড মেনে আমাদের ত্বক, চুল ও আবহাওয়ার ভিত্তিতে প্রোডাক্ট তৈরি করে। আমার কাছে স্কিন ক্যাফে এমনই একটা নাম। দেশীয় একটি ব্র্যান্ড; যা প্রাকৃতিক উপাদান এবং সায়েন্টিফিক ফরমুলেশনের অনন্য সমন্বয়ে কাজ করে। তাদের প্রতিটি প্রোডাক্ট ডার্মাটোলজিক্যালি টেস্টেড। তাদের রয়েছে হাইড্রেটিং ফেসওয়াশ, ময়েশ্চারাইজার উইথ নিয়াসিনামাইড, সানস্ক্রিনস উইথ এসপিএফ ৫০, হেয়ার কেয়ার, বডি কেয়ার আর লিপ বাম- যেগুলো মোহিতো ও স্মুদির মজার ফ্লেভারে। এগুলো নিরাপদ, কার্যকরী আর বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশী ত্বকের যত্নে। সবচেয়ে মজার বিষয়- সব প্রোডাক্ট ইউনিসেক্স হওয়ায় ব্যবহার করতে পারে সবাই।
আমার মায়ের রুটিনে ভালবাসা ছিল, কিন্তু ভালবাসায় শেষ না। এখন আমি নিজে ত্বক ও চুলের যত্ন নেই আরও সচেতনভাবে। আমি লেবেল পড়ি, প্রোডাক্ট টেস্ট করি আর আমার বডির কথা শুনি। আমি প্রোডাক্ট জেনে-বুঝে পছন্দ করি, মিথ বা ভুল বিশ্বাস শুনে নয়।
বাংলাদেশী সৌন্দর্যের ভবিষ্যৎ এখন আরও উজ্জ্বল শুধু ট্রেন্ড বা ঘরোয়া পদ্ধতি নয় বরং বিজ্ঞান, নিরাপত্তা আর স্বচ্ছতা। নারীরা চায় ক্লিয়ার লেবেলস, অনেস্ট তথ্য আর এমন প্রোডাক্ট; যা তাদের ত্বক ও চুলের জন্য উপযোগী। প্রোডাক্ট সিলেক্টে নলেজ ও রিলায়েবল গাইডেন্স অ্যাক্সেসসের মাধ্যমে আমরা আরও সচেতন হব।
কেকে/এমএ