সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: হামাস-ইসরায়েল বন্দি বিনিময় শুরু, প্রথম দফায় ৭ জিম্মি হস্তান্তর      ভারী বর্ষণ-বন্যায় মেক্সিকোতে নিহত ৪৪, নিখোঁজ ২৭      ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      
জাতীয়
ভারতে হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যায়ে বিক্ষোভ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:৫৫ এএম

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভ হয়েছে।

গতকাল সোমবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

হামলার প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি


বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাবির শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর একটি মিছিল বের করা হয়। এ সময় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিলে যোগ দেন। পরে মিছিলটি ভিসি চত্বর হয়ে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক সমাবেশে মিলিত হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। স্লোগানগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘গোলামী না আজাদি, আজাদি আজাদি’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘হাইকমিশনে/আগরতলায় হামলা কেন, দিল্লি তুই জবাব দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আমরা কী চাই, আজাদি আজাদি’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি।

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ভারত আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ। তাদের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকবে, প্রতিবেশী হিসেবে ভালো সম্পর্ক থাকবে। কিন্তু কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে আমাদের রাজা-প্রজার সম্পর্ক হতে পারে না। ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার জন্য অবশ্যই ভারতকে ক্ষমা চাইতে হবে।

তারা বলেন, ভারতকে বলতে চাই— এ দেশে আর আওয়ামী লীগের ক্ষমতা নেই। সুতরাং তারা যেন আওয়ামী লীগের আমলের মতো করে এ দেশে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা না করে। দিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা ভারতের আধিপত্য মেনে নেব না। যেভাবে আমরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি সেভাবেই আমরা দিল্লির আগ্রাসনও রুখে দেব।

এ সময় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ভারত বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা করে এক নগ্ন ইতিহাস রচনা করেছে। ভিয়েনা কনভেনশনের বিপরীতে গিয়ে তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। ভারত তাদের আচরণের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে তারা বিশ্বসভ্যতা এবং ভদ্রতাকে ধারণ করে না। ভারত সরকারকে তাদের এমন নির্লজ্জ আচরণের জন্য বাংলাদেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

তিনি বলেন, ভারতের ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের সর্বত্র বিদ্যমান। ভারতের তৈরি মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ আমাদেরকে হত্যা করার জন্য ডাকসুতে হামলা করেছে। গণঅভ্যুত্থানের সময় দেখা যায় সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানো অনেক সামরিক লোক হিন্দিতে কথা বলছে। ভারতের অনুগত হাসিনাকে রক্ষা করতে বিজেপি সরকার তাদেরকে এদেশে পাঠিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যদি না খেয়েও মারা যায়, তবু দেশকে বিক্রি করব না। ভারত বাংলাদেশে নিয়ে খেললে আমরা সেভেন সিস্টার নিয়ে খেলব। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হামলায় সেভেন সিস্টার চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে।

রাবিতে বিক্ষোভ

বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৯টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জুহা চত্বরে মিলিত হয় শিক্ষার্থীরা। পারে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক দিয়ে তালাইমারি মোড়ে সমাবেশ করেন তারা।

এসময় তারা, ‘ভারতের দাদাগিরি, থুথু মারি থুথু মারি’, ‘ভারতের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতীয় তালবাহানা, এই বাংলায় চলবেনা’, ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, দাঙ্গাবাজদের ঠাই নাই’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘আপোষ না সংগ্রাম? সংগ্রাম, সংগ্রাম’, ‘গোলামী না মৃত্যু? মৃত্যু মৃত্যু’, ‘আমার দেশের অপমান, সইবেনা আর জনগণ’, ‘চাটুকারদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ভারতীয় বন্দিশালায়, লাথি মার, ভাংরে তালা’, ‘ভারতীয় আধিপত্য, নিপাত যাক, বিনাশ যাক’, ‘ভারতীয় আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ভারতের একমাত্র বন্ধুত্ব ছিল আওয়ামী লীগের সাথে, একমাত্র বন্ধুত্ব ছিল ওবায়দুল কাদেরের সাথে, একমাত্র বন্ধুত্ব ছিল শেখ হাসিনার সাথে এবং বন্ধু ছিল তার পরিবারের সাথে। বাংলাদেশের সাথে তাদের কোন বন্ধুত্ব ছিল না। আমরা আমাদের বিজয়টাকে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে বিজয় বলে ধরি না। আমরা ভারতের বিপক্ষে বিজয় বলে মনে করি।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, মানুষের লাশের উপর দিয়ে ভারতের রাজ কায়েম হতে আমরা দেব না। ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাই কমিশনে অ্যাটাক করা হয়েছে। আমরা কিন্তু এখনো চুপ আছি। বাংলার মানুষ গর্জে উঠলে ভারতের আধিপত্য ছারখার হয়ে যাবে।

এ সময় বক্তারা ভারতের পণ্য বয়কটেরও ডাক দেয়। একদল শিক্ষার্থী ভারতের পণ্য পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায়।

জাবিতে মশাল মিছিল


হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সোমবার রাত নাড়ে নয়টার দিকে ক্যাম্পাসের বটতলা এলাকা থেকে মশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরসহ কয়েকটি সড়ক ঘুরে আবার বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সমাবেশ করেন তারা। সেখানে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম, ছাত্রশিবিরের জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান, গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ।

ইবিতে বিক্ষোভ


ভারতের আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

এদিন রাত সাড়ে ৯টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহসমন্বয়ক নাহিদ হাসান ও তানভীর মণ্ডলসহ অন্য সহসমন্বয়করা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, হাজারও ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে চব্বিশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে আমাদের অন্যতম দাবি ছিল ভারতীয় আগ্রাসন থেকে মুক্তি পাওয়া। বিগত দিনগুলোতে ভারত হাসিনাকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটেছে। আমরা আর কোনো রাষ্ট্রের গোলামীর পাত্র হতে চাই না। অস্তিত্বের প্রশ্নে যারা ভারত প্রীতি ছাড়তে পারে না, তাদের সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই। আমরা স্বৈরাচারী হাসিনার পতন ঘটিয়েছি। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এই সংগ্রামে সকলকে পাশে চাই।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল

এদিকে রাত নয়টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এসময় তারা, ‘ভারতের দাদাগিরি, থুথু মারি থুথু মারি’, ‘ভারতের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতীয় তালবাহানা, এই বাংলায় চলবেনা’, ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, দাঙ্গাবাজদের ঠাই নাই’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘আপোষ না সংগ্রাম? সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভ মিছিলগুলোতে অংশগ্রহণকারীরা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। তবে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এর আগে সোমবার দুপুরের দিকে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা চালায় হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা।

কেকে/এআর
আরও সংবাদ   বিষয়:  ভারতে হাইকমিশনে হামলা   বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যায়ে বিক্ষোভ   ভারতীয় আগ্রাসন   মশাল মিছিল  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

চিত্রনায়ক বাপ্পারাজের রহস্যময় পোস্টে উদ্বিগ্ন ভক্তরা
ফ্যাসিস্ট নাসিমের প্রতারণার শিকার শতাধিক নারী
হামাস-ইসরায়েল বন্দি বিনিময় শুরু, প্রথম দফায় ৭ জিম্মি হস্তান্তর
বিশ্ব ব্যর্থতা দিবস আজ
সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সর্বাধিক পঠিত

নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে : তানভীর হুদা
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি
মৌলভীবাজারে জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের স্মারকলিপি
নালিতাবাড়ীতে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত

জাতীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close